প্রেমিকার বিয়ের দিনে প্রেমিকের মরদেহ উদ্ধার, পরিবারের দাবি হত্যাকাণ্ড

নড়াইলের লোহাগড়ায় প্রেমিকার বিয়ের দিনে সৈয়দ মাসুম বিল্লাহ নামক এক যুবকের মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতের চিহ্ন ছিল এবং বাম হাতের একটি আঙুলের নখ উপড়ে ফেলা হয়। নিহতের পরিবার এটিকে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করছে।
গতকাল শুক্রবার (১ আগস্ট) বেলা ১১টার পর গোপালগঞ্জ-নড়াইল সীমান্তবর্তী কাশিয়ানী এলাকার মধুমতি সেতুর পাশে মাসুমকে অচেতন অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে উদ্ধার করেন স্থানীয় এক অটোরিকশাচালক সুজন। পরে তাকে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে ঢাকায় পাঠানোর প্রস্তুতির সময় দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তিনি মারা যান।
মাসুম বিল্লাহ লোহাগড়া উপজেলার শালনগর ইউনিয়নের মাকড়াইল (মধ্যপাড়া) গ্রামের মৃত সৈয়দ রকিবুল ইসলামের ছেলে। স্বজনদের ভাষ্য অনুযায়ী, উপজেলার লাহুড়িয়া ইউনিয়নের এক কিশোরীর সঙ্গে মাসুমের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু পারিবারিক অসম্মতিতে সেই সম্পর্ক ভেঙে যায়। এরপর গত ৩০ জুলাই মাসুম ঢাকায় বড় বোনের বাসায় যান। প্রেমিকার বিয়ের খবরে শুক্রবার ভোরে তিনি লোহাগড়ায় ফিরে আসেন।
চাচাতো ভাই তরিকুল জানান, সকাল ৯টার দিকে মাসুম তাকে ফোন করে জানায় সে লোহাগড়ায় এসেছে। এরপর থেকে তার আর কোনো খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে হাসপাতাল থেকে পরিবারের কাছে মৃত্যু সংবাদ আসে।
অটোরিকশাচালক সুজন বলেন, “দুর্ঘটনার কোনো চিহ্ন ঘটনাস্থলে ছিল না। এলাকাবাসীও কোনো দুর্ঘটনার শব্দ বা ঘটনা দেখেননি। মনে হয়েছে, কেউ তাকে গাড়ি থেকে ফেলে রেখে গেছে।”
মাসুমের চাচা শরিফুল ইসলাম জানান, প্রেমিকার বিয়ে আটকাতে সকালে মাসুম তার সঙ্গে দেখা করতে যায়। প্রেমিকার বাবার পক্ষ থেকে গ্রামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে হুমকির কথা জানানো হয়—যে মাসুম ঝামেলা করছে এবং তাকে পেলেই ‘অবস্থা খারাপ’ হবে। এরপর থেকে মাসুমের ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
তিনি আরও বলেন, “যদি বড় গাড়িতে অ্যাক্সিডেন্ট হতো, তাহলে হাত-পা ভাঙা বা শরীর ছিন্নভিন্ন থাকত। কিন্তু মাথাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় মারধরের চিহ্ন রয়েছে। নখ উপড়ে ফেলা হয়েছে। এটি নিঃসন্দেহে হত্যাকাণ্ড, প্রেমিকার পরিবারের লোকজনই মাসুমকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করেছে।”
এ ঘটনায় প্রেমিকার পরিবারের কারও সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
লোহাগড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, “মাসুম বিল্লাহকে মৃত অবস্থায় লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে থানায় আনা হয়। প্রাথমিকভাবে মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলা হলেও, মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য নড়াইল সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে প্রকৃত কারণ জানা যাবে এবং প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।