খেলতে গিয়ে পাইলিংয়ের গর্তে পড়ে ঝরল ২ ভাইয়ের প্রাণ

২ জুন ২০২৫, ৩:২৯:৪০

এবার কিশোরগঞ্জে পাইলিংয়ের গর্তের পানিতে ডুবে দুই ভাইয়ের মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। তারা হলেন সদর উপজেলার নগুয়া কদম তলার মমিন মিয়ার ছেলে ওবায়দুল্লাহ (৪) ও পাকুন্দিয়া উপজেলার মসুয়া এলাকার মকবুল হোসেনের ছেলে মাহাদ হোসেন (৫)। সম্পর্কে দুজন মামাতো ফুফাতো ভাই। রোববার  রাতে সদর উপজেলার নগুয়া কদমতলা এলাকায় ঘরের পাশে গর্তে পড়ে মারা যায় তারা। সোমবার (২ জুন) বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন।

এদিকে পরিবার সূত্রে জানা যায়, ঘরের পাশে স্বপন মিয়া নামে এক ব্যক্তি বাড়ি করার জন্য পিলার স্থাপন করতে গর্ত করেন। বিকেলে মাহাদ ও ওবায়দুল্লাহ ঘর থেকে বাহিরে খেলা করতে বের হয়। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ায় পরিবারের সদস্যরা তাদের খুঁজতে গিয়ে সেই গর্তের ভেতর পানিতে তাদের ভেসে থাকতে দেখেন। পরে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্ত্যবরত চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন।

ওবায়দুল্লাহ’র মা মরিয়ম আক্তার বলেন, আমার বিয়ের দশ বছর পর একটা ছেলে সন্তান হয়েছে। অনেক স্বপ্ন ছিল তাকে নিয়ে। সেই স্বপ্ন আমার এভাবে ভাঙবে বুঝতে পারিনি। বিকেলে বাড়ির ওঠানে দুজন খেলা করছিল। কোন ফাঁক দিয়ে বাহিরে চলে গেছে বুঝতে পারিনি। এতো বড় বাড়ি করবে আর পিলার দেওয়ার জন্য এতো বড় গর্ত করছে কোন প্রটেকশান নাই। গর্তে পানি জমে থাকায় সেখানে গিয়ে পড়ে মারা গেছে আমার সন্তান। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ায় খোঁজাখুজির একপর্যায়ে গর্তের মধ্যে গিয়ে দুজনকে ভেসে থাকতে দেখি।

মাহাদ হোসেনের মা সুমা আক্তার বলেন, আমার স্বামী প্রবাসী। ছেলেকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বিকেলে বেড়াতে আসছি। দুজন উঠানে খেলা করছিল। অনেকক্ষণ হয়ে যাওয়ায় কোন খোঁজ খবর পাচ্ছিলাম না। ভেবেছিলাম আশপাশের বাড়িতে মনে হয়ে খেলা করতেছে। পরে খোঁজ নিয়ে বাড়ি ঘরে না পেয়ে মসজিদের মাইকিং করা হয়। সন্ধ্যার পর ঘরের পাশে গর্তে দুজনকে একসঙ্গে পাওয়া যায়। হাসপাতাল নিয়ে গেলে ডাক্তার মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে কিশোরগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের চিকিৎসক ডা. কায়সার আহমেদ বলেন, সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হাসপাতালে দুই শিশু সন্তানকে তাদের স্বজনরা নিয়ে আসে। দুজনই পানিতে পড়ে গিয়েছিল। হাসপাতালে নিয়ে আসার আগেই দুজন মারা যায়। কিশোরগঞ্জ সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দুই শিশুর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত হতে পেরেছি। আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।