লোকসানে কৃষক ও ব্যবসায়ী, হিমাগারে আলু পচনে

ছবি: সংগৃহীত
জয়পুরহাটের কালাইয়ে কর্তৃপক্ষের নানা অবহেলায় হিমাগারে সংরক্ষণে রাখা আলু পচন ধরেছে বলে অভিযোগ উঠেছে গঙ্গাদাশপুর ও মোসলেমগঞ্জ মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগারের বিরুদ্ধে। এমন অবস্থায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষক ও ব্যবসায়ীরা হিমাগার কর্তৃপক্ষের কাছে ক্ষতিপূরণ দাবি করেছেন।
জানা গেছে, উপজেলার উদয়পুর ইউনিয়নের একই মালিকের দুইটি হিমাগার মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগার এবং মোসলেমগঞ্জ মান্নান বীজ হিমাগারে ৬৫ কেজি ওজনের রোমানা জাতের আলু প্রায় ৩০ হাজার বস্তা পচা ও দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ নিরুপায় হয়ে কৃষক ও ব্যবসায়ীদের সংবাদ দিয়ে পচা ও দুর্গন্ধযুক্ত আলু বের করে দিচ্ছে।
বস্তা খুলে দেখা যায় ৬০ থেকে ৬৫ কেজি ওজনের মধ্যে প্রায় ৩০ কেজি আলু পচে দুর্গন্ধ বের হচ্ছে। বাজারে যেখানে ৬০ কেজি আলুর দাম ২৫শ টাকা সেখানে হিমাগারে শেডে পাইকারি বিক্রি করছে এক হাজার থেকে ১২শ টাকা এতে করে কৃষক ও ব্যবসায়ীর প্রতি বস্তায় লোকসান গুনতে হচ্ছে ১৩শ থেকে ১৫শ টাকা। এ ছাড়াও এসব পচন ধরা আলু কিনতেও চাচ্ছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে করে চরম ক্ষতির মুখে পড়েছেন ওই এলাকার কৃষক ও ব্যবসায়ীরা।
মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগারে চুক্তি ভিত্তিক আলু বাছাইকারী নারী শ্রমিক দেলোয়ারা, রওশন আরা, ফিরোজার সাথে কথা হলে তারা জানান, প্রতিটা বস্তায় ৬০ থেকে ৬৫ কেজি ওজনের আলু থাকে সেখানে প্রায় ৩০ কেজি আলু পচন ধরার কারণে ফেলে দিতে হচ্ছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ব্যবসায়ীরা জানান, হিমাগার কর্তৃপক্ষ ধারণক্ষমতার চেয়েও অতিরিক্ত আলু রাখা এবং সময়মতো গ্যাস না দেওয়ার কারণে তাদের ক্ষতি হয়েছে। এ অবস্থায় তারা সুষ্ঠু তদন্ত চান।
উপজেলার সানাইপুকুড় গ্রামের কৃষক খায়রুল ইসলাম ও জাকারিয়া বলেন, মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগারে রাখা আমাদের রাখা ৭১ বস্তা আলু পচে গেছে, আলু নিতে গেলে আলুর ক্ষতিপূরণ না দিয়ে উলটো বস্তা প্রতি ৩৪০ টাকা ভাড়া নিয়ে আলু ছেড়েছে।
নুনুজ গ্রামের কৃষক আলী বলেন, আমার ৪৫ বস্তা আলু পচে নষ্ট হয়ে গেছে। আমরা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে ফসল ফলাই আর সেই ফসল যদি হিমাগার কর্তৃপক্ষ তাদের লাভের আশায় ও অবহেলায় নষ্ট করে ফেলে তখন কষ্টের সীমা থাকেনা।
ব্যবসায়ী মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, মান্নান এন্ড সন্স হিমাগারে আলু নষ্টের কারণে আমাকে আগাম ২৫০ বস্তা আলু বের করে বিক্রি করে খেতে হলো। আমার আলু যা ক্ষতি হবে কোম্পানিকে দিতে হবে এটা আমার দাবি।
গঙ্গাদাশপুর মান্নান এন্ড সন্স বীজ হিমাগারের ম্যানেজার কামাল হোসেন বলেন, সব হিমাগারে আলু কমবেশি পচে। রোমানা জাতের আলু একটু বেশি পচেছে। এতে কোন সমস্যা হবেনা।
কালাই উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ অরুণ চন্দ্র রায় বিডি২৪ লাইভ’কে জানান, আমরা কৃষকদের কাছ থেকে কোন অভিযোগ পাইনি। অভিযোগ পেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা নিব।
কালাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আবুল হায়াত বলেন, কৃষক ও ব্যবসায়ীরা কোন অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য