দেশে হিজড়াদের জন্য প্রথম মসজিদ নির্মাণ

ছবি: সংগৃহীত
ময়মনসিংহের ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে সরকারি জমিতে হিজড়াদের উদ্যোগে স্থাপিত হয়েছে মসজিদ। সাধারণত হিজড়া জনগোষ্ঠীকে মসজিদে প্রবেশ করতে দেওয়া হয় না বলেই এ মসজিদ নির্মাণ করা হয়েছে বলে জানান স্থানীয় হিজড়াকল্যাণ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা মুফতি আবদুর রহমান আজাদ।
তিনি বলেন, ‘হিজড়া জনগোষ্ঠীর সবাই মিলে ব্রহ্মপুত্রের তীরে টিনের ছোট্ট এই মসজিদটি নির্মাণ করেছেন। এর মধ্য দিয়ে এই প্রথম দেশে হিজড়াদের জন্য বানানো হলো মসজিদ। আরেকটি শহরে এমন মসজিদ বানানোর উদ্যোগ নেওয়া হলেও স্থানীয়দের প্রতিবাদের মুখে তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।’
স্থানীয় সূত্রের বরাতে জানা যায়, চলতি মার্চ মাসে চালু হওয়া ময়মনসিংহের এ মসজিদ বানাতে অর্থ ও শ্রম দিয়েছেন হিজড়ারা। এতে একটি কবরস্থানও রয়েছে। গত বছর স্থানীয় কবরস্থানে এক হিজড়ার মৃত্যুর পর তাকে শায়িত করতে দেয়নি গ্রামবাসী। এরপর এখানে বানানো হয় আলাদা কবরস্থান।
এ প্রসঙ্গে দক্ষিণ চর কালিবাড়ি মসজিদের ইমাম আবদুল মোতালেব বলেন, ‘হিজড়ারা তো আমাদেরই সন্তান। তাদের সঙ্গে বৈষম্যমূলক আচরণ ইসলাম ধর্ম শেখায় না। হিজড়াও আল্লাহর সৃষ্টি করা অন্যান্য বান্দার মতোই। তাদেরকে বঞ্চিত করা ঠিক না। আমরা সবাই মানুষ। হয়তো কেউ নারী, কেউবা পুরুষ। আল্লাহ সবার জন্যই পবিত্র কোরআন নাজিল করেছেন। এ কারণে সবাইকে নামাজ পড়তে দেওয়া উচিত।’
এ দিকে দক্ষিণ চর কালীবাড়ি মসজিদের আশেপাশের বাসিন্দাদের মাঝেও বেশ ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী আসছেন হিজড়া জনগোষ্ঠীর বানানো এ মসজিদে। কথা হয় ওই এলাকার স্থানীয় এক বাসিন্দার সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘পর পর ২ সপ্তাহ এ মসজিদে জুমার নামাজ পড়েছি। আগে হিজড়াদের সম্পর্কে আমার অনেক ভুল ধারণা ছিল। একই এলাকায় বসবাস এবং একই মসজিদে নামাজ আদায় করার পর থেকে আমার অনেক ভুল ধারণা দূর হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে হিজড়া পরিচিতিকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। কেউ কেউ রাজনীতি করেন। ২০২১ সালে একটি ছোট শহরের মেয়র হিসেবে একজন নির্বাচিত হন। তবে সমাজে এখনো তাদেরকে ছোট করেই দেখা হয়। এছাড়া দারিদ্র্য এবং সহিংসতার শিকার বেশি হন হিজড়ারা।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য