প্রচ্ছদ / জেলার খবর / বিস্তারিত

পরীক্ষা চলাকালে স্ত্রীর সিট দেখতে বাধা, কলেজে সাবেক ছাত্রলীগ কর্মীর রামদা নিয়ে মহড়া!

১১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১:৪০:৩৯

এবার ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় একটি কলেজে পরীক্ষা চলাকালে স্ত্রীর সিট দেখতে বাধা দেওয়ায় প্রকাশ্যে রামদা নিয়ে আল সাদ নামের এক যুবককে মহড়া দিতে দেখা গেছে। এ সময় অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীদের ভয়ভীতি প্রদর্শন করে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ওই যুবকের বিরুদ্ধে। রামদা নিয়ে মহড়া দেওয়ার সময় কলেজটিতে ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রে প্রবেশে বাধা দেওয়ায় ওই যুবক এমন কাণ্ড করেছেন বলে জানা গেছে। এ মহড়ার দৃশ্য কলেজটিতে স্থাপন করা সিসিটিভি ক্যামেরায় ধরা পড়েছে।

গত মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) বেলা পৌনে ১টার দিকে উপজেলার কামারগ্রাম আদর্শ ডিগ্রি কলেজ চত্বরে এ ঘটনা ঘটে। পরে খবর পেয়ে কলেজটিতে পুলিশ পৌঁছানোর আগেই ওই যুবক ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন বলে থানা সূত্রে জানা গেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, কলেজের প্রধান ফটকে একটি মোটরসাইকেলে দুই যুবক অবস্থান নেয়। ওই সময় মোটরসাইকেলের পেছন থেকে নামা আল সাদের হাতে বড় আকৃতির দেশীয় অস্ত্র রামদা উচিয়ে মহড়া দিতে কলেজের মূল ভবনে প্রবেশ করে। কিছুক্ষণ পর তাকে (রামদা হাতে যুবক) কলেজের ভেতর থেকে বের হতে দেখা যায়।

স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, যুবক আল সাদ আলফাডাঙ্গা পৌরসদরের কুসুমদি গ্রামের আনোয়ার হোসেনের ছেলে এবং পূর্বে ছাত্রলীগের কর্মী হিসেবে সক্রিয় ছিলেন। এ ছাড়া ওই যুবকের সঙ্গে থাকা অপর যুবক সাদি (২৫) পৌরসদরের শ্রীরামপুর এলাকার গফুর খাঁর ছেলে। বিষয়টি নিশ্চিত করে কলেজের অধ্যক্ষ (ভারপ্রাপ্ত) মো. মুজিবুর রহমান জানান, ডিগ্রি প্রথম বর্ষের পরীক্ষা চলাকালে কেন্দ্রে প্রবেশের সময় আমি ওই যুবককে (সাদ) বের হওয়ার অনুরোধ করি।

তখন তিনি বলেন, আমার স্ত্রী কোথায় বসেছে দেখব। আমাকে তিনি হাত উঁচু করে বলতে থাকেন, আমাকে চেনেন, আমি দেখে নেব, থানা পুলিশ দেখতেছি! তখন পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষক সমীর কুমার বিশ্বাস ওই যুবকের হাত ধরে বাধা দিলে আরো উত্তেজিত হয়ে উঠে। পরে প্রায় ২০ মিনিট পর একটি মোটরসাইকেলে করে রামদা নিয়ে কলেজের ভেতরে ঢুকে ত্রাস সৃষ্টি করেন ওই যুবক। তখন আমিসহ সকল শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) ফোন করে বিষয়টি জানালে পুলিশ আসার আগেই তিনি চলে যান।

এ বিষয়টি নিয়ে স্থানীয় নেতারা কলেজে এসে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং তাদের মাধ্যমে ওই যুবক ক্ষমা চেয়েছেন বলে অধ্যক্ষ জানান। এ ঘটনায় আল সাদের পক্ষে কলেজ অধ্যক্ষের কাছে মৌখিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন আলফাডাঙ্গা উপজেলা বিএনপির সভাপতি আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস ও সাধারণ সম্পাদক নুরুজ্জামান খসরু। বিষয়টি নিয়ে কথা হলে আব্দুল মান্নান মিয়া আব্বাস ঘটনার কিছুই জানেন না বলে জানান।

এ বিষয়ে আলফাডাঙ্গা থানার ওসি মো. হাসনাত বলেন, খবর পেয়ে তাৎক্ষণিকভাবে কলেজটিতে পুলিশ পাঠানো হয়েছিল। তবে পুলিশ যাওয়ার আগেই ওই যুবক ঘটনাস্থল ত্যাগ করেন। এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মন্তব্য