বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকীতে মুসলিম ঐতিহ্য রক্ষার আহ্বান পাকিস্তানের
ফাইল ছবি
ভারতের উত্তর প্রদেশের অযোধ্যায় ঐতিহাসিক বাবরি মসজিদ ধ্বংসের বার্ষিকী উপলক্ষে সারা বিশ্বে মুসলিম ধর্মীয় ঐতিহ্য রক্ষায় আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সহায়তা কামনা করেছে পাকিস্তান। গতকাল শুক্রবার সাপ্তাহিক সংবাদ ব্রিফিংয়ে দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র তাহির আন্দ্রাবি এক প্রশ্নের জবাবে এ আহ্বান জানান।
সংবাদমাধ্যম জিও নিউজ বলছে, ১৯৯২ সালে উগ্রপন্থিরা কয়েক শতাব্দী পুরোনো বাবরি মসজিদটি ভেঙে ফেলে। এরপর দেশজুড়ে দাঙ্গা ছড়িয়ে পড়ে, যাতে প্রায় ২ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়। নিহতদের বড় অংশই ছিলেন মুসলমান।
হিন্দুত্ববাদীদের দাবি, ওই স্থানটি ভগবান রামের জন্মস্থান এবং মসজিদটি নির্মাণের বহু আগে থেকেই জায়গাটি তাদের কাছে পবিত্র বলে বিবেচিত। পরে ১৫২৮ সালে মুঘল মুসলিম শাসকরা সেখানেই বাবরি মসজিদ নির্মাণ করেন। আর সর্বশেষ গত নভেম্বরে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি অযোধ্যায় নির্মিত রাম মন্দিরে একটি গেরুয়া পতাকা উত্তোলন করেন। সেখানে মন্দিরের নির্মাণ সম্পন্ন হওয়ার আনুষ্ঠানিকতা হিসেবে করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
মূলত দীর্ঘদিন ধরে হিন্দু-মুসলমানদের মধ্যে বিরোধিতার কেন্দ্র ছিল এই স্থানটি। আন্দ্রাবি বলেন, ‘বাবরি মসজিদ আমাদের সামষ্টিক স্মৃতিতে অমলিন। ১৯৯২ সালের ৬ ডিসেম্বর অযোধ্যায় এ ঐতিহাসিক মসজিদ ধ্বংস হয়েছিল, যা আজও গভীর দুঃখ ও উদ্বেগের স্মৃতি। যারা অসহিষ্ণুতা ও ধর্মীয় বৈষম্যের বিরুদ্ধে তাদের জন্য ঘটনাটি আজও বেদনাদায়ক।”
পাকিস্তান বলেছে, ধর্মীয় ঐতিহ্য ও পবিত্র স্থাপনা রক্ষা করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের যৌথ দায়িত্ব। মুখপাত্রের ভাষায়, ‘মুসলিম ধর্মীয় প্রতীক বা ঐতিহাসিক উত্তরাধিকার ক্ষুণ্ন করে এমন সব কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করা জরুরি।’
পাকিস্তান আরও জানায়, যেকোনও ধর্মীয় উপাসনালয় অপবিত্র করা ধর্মীয় সমতার নীতির লঙ্ঘন এবং এটি বিভিন্ন সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধকে দুর্বল করে। এই ঘটনার পর ভারতীয় মুসলমানরা দীর্ঘদিন ধরে যে বঞ্চনা ও মানসিক আঘাত অনুভব করছেন তা গুরুতর উদ্বেগের বিষয়।
মুখপাত্র বলেন, ‘রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় শক্তি পেয়ে হিন্দু ফ্যাসিবাদী সংগঠনগুলো এখন ভারতীয় মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের সম্পূর্ণভাবে কোণঠাসা করার দাবি তুলছে।’
তিনি বলেন, পাকিস্তান আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে বিশ্বাস করে। আমরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে, বিশেষ করে জাতিসংঘ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান ও প্রভাবশালী বৈশ্বিক মহলকে মুসলিম ধর্মীয় ঐতিহ্য রক্ষার প্রয়োজনীয়তা স্বীকার করতে এবং এমন বেদনাদায়ক ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঠেকাতে ভূমিকা রাখার আহ্বান জানাই।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।



























মন্তব্য