রবিবার ৭ ডিসেম্বর, ২০২৫, ০৪:৫৭ অপরাহ্ণ

১৫ বছরের মধ্যে সেনাবাহিনী যেন দাঁড়াতে না পারে-পরিকল্পনা ছিল আ.লীগের

৪ ডিসেম্বর, ২০২৫ ৪:২০:৩০

রাজধানীর পিলখানায় সংঘটিত বর্বর হত্যাকাণ্ড তদন্তের জন্য অন্তর্বর্তী সরকারের গঠিত জাতীয় স্বাধীন তদন্ত কমিশন প্রায় ১১ মাস তদন্ত শেষে গত রোববার প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূসের কাছে প্রতিবেদন হস্তান্তর করে। ২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ওই ঘটনায় ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। তদন্ত কমিশনের ৩৬০ পৃষ্ঠার মূল প্রতিবেদনে আওয়ামী লীগের সেনা কর্মকর্তাদের হত্যার পরিকল্পনা বিষয়টি কথা মেজর নাসিরের জবানবন্দিতে উঠে এসেছে ।

গত ২০০৮ সালের জুন মাসে, আনুমানিক ১ থেকে ৬ বা ৮ তারিখের মধ্যে, মেজর নাসির নামের একজন অবসরপ্রাপ্ত সামরিক অফিসার বরিশালে ডিজিএফআইয়ের লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুস সালামের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করেন এবং লেফটেন্যান্ট কর্নেল আব্দুস সালামের সঙ্গে দেখা করে কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রদানের আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং এরই ধারাবাহিকতায় মেজর নাসির লে. কর্নেল সালামের সঙ্গে দেখা করেন এবং দুটি বই উপহার দিয়ে নিম্নলিখিত তথ্য দিয়েছিলেন—

‘মেজর নাসির জানান, তিনি সম্প্রতি বিদেশ থেকে ফিরেছেন। একই এয়ারক্রাফটে তিনি আওয়ামী লীগের কিছু শীর্ষ নেতাকে দেখেছেন, যারা ভারতের বারাসাতে ‘র’-এর সঙ্গে বৈঠক করে ফিরছিলেন। সেখানে আবুল হাসনাত আবদুল্লাহসহ কয়েকজন নেতা উপস্থিত ছিলেন। তিনি জানান, তারা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একটি বড় ষড়যন্ত্র পরিকল্পনা করেছে। তাদের বক্তব্য ছিল, আগামী ১২ থেকে ১৫ বছরের মধ্যে সেনাবাহিনী যেন নৈতিকভাবে দাঁড়াতে না পারে, সেভাবে আঘাত হানার পরিকল্পনা তারা করছে।’ লে. কর্নেল সালাম সঙ্গে সঙ্গে ডিজিএফআইয়ের ডিরেক্টর সিআইবি ব্রিগেডিয়ার বারীকে বিষয়টি অবহিত করেছিলেন; কিন্তু তিনি বিষয়টিকে গুরুত্ব না দিয়ে উল্টো লে. কর্নেল সালামকে তিরস্কার করেছিলেন। (সূত্র : সাক্ষী নম্বর : ৫৭)

খ. ২০০৮ সালের জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি মেজর (অব.) নাসির উদ্দিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে ফিরে আসেন। দেশে ফিরে তিনি কলকাতা যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন এবং ইন্ডিয়ান হাইকমিশনে টুরিস্ট ভিসার জন্য আবেদন করেন। প্রথমবার সেখানে গেলে মেজর নাসিরকে তার ভিসার জন্য ডিফেন্স উইংয়ে যোগাযোগ করতে বলা হয়। পরের দিন মেজর নাসির হাইকমিশনে আবার যান, রিসিপশনে ১৫-২০ মিনিট অপেক্ষা করেন। তারপর তাকে বলা হয়, আগে নিরাজ শ্রীবাস্তবের সঙ্গে দেখা করতে হবে। প্রথম সাক্ষাৎটি ছিল বন্ধুত্বপূর্ণ। দিল্লি থেকে আসা তরুণ কর্মকর্তা মেজর নাসিরকে বিস্কুট ও কফি অফার করেন, মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অর্ধঘণ্টা আলোচনা করেন এবং মেজর নাসিরকে পরের দিন আসতে বলেন। দ্বিতীয় দিন তিনি কিছুটা গম্ভীর হয়ে বলেন, বাংলাদেশের মানুষ আবেগপ্রবণ এবং পাকিস্তানের দর্শন অনুসরণ করে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের আর্মি, নেভি ও এয়ার ফোর্সের ডকট্রিন পাকিস্তানের সঙ্গে একই। এরপর তিনি মেজর নাসিরকে পদুয়া সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন। মেজর নাসির বলেন, তিনি আমেরিকায় অবস্থান করার কারণে কিছু জানেন না। নিরাজ শ্রীবাস্তব বলেন, Padua-তে বিডিআর ১৬-১৭ জন বিএসএফ সদস্যকে হত্যা করেছে। এটি ছিল একটি গুরুতর উসকানিমূলক ঘটনা। তিনি বলেন, ‘Padua will not go unchallenged and unpunished.’ ২০০৮ সালে আরেকবার এক উচ্চপদস্থ ভারতীয় কূটনীতিকের সঙ্গে মেজর নাসিরের দেখা হয়। তিনি মাসটি স্মরণ করতে পারেননি, তবে ঘটনাগুলো সবই ২০০৮ সালের মধ্যে হয়েছিল। (সূত্র : সাক্ষী নম্বর : ৯৫) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে জানা যায়, Mr. Niraj Srivastava ২০০৬ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাইকমিশনে Minister পদবিতে নিয়োজিত ছিলেন। (সূত্র : পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পত্র নম্বর : ১৯.০০.০০০০.৭৩০.২৮.৩৭.২৫-২৩১৯, তারিখ ২২ অক্টোবর ২০২৫, সংযোজনী : ৫৩)

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


মন্তব্য

Editor & Publisher: Md. Abdullah Al Mamun

Office: Airport haji camp

Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com

Developed by RL IT BD