ভারত যে দুই কারণে হাসিনাকে ফেরত দেবে না
শেখ হাসিনার অনুপস্থিতিতে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তিনি ভারতে অবস্থান করছেন। আর তা কার্যকর হতে পারে, যদি ভারত তাঁকে বাংলাদেশে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু আদৌ পাঠাবে কী ? এ নিয়ে বিশেষ প্রতিবেদন করেছে সিএনএন। প্রতিবেদন করেছেন রিয়া মুগল। এ প্রতিবেদনে মুলত দেখা যায় , দুই কারণে ভারত শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশে পাঠাবে না। এক,প্রত্যর্পণ আইন। দুই, নিজেদের নিরাপত্তার জন্যে এ রায়কে “ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক” ভাবে দেখা।
গত ২০২৪ সালের ছাত্র বিক্ষোভে সহিংস দমন-পীড়ন চালানোয় ক্ষমতাচ্যুত এই নেত্রীকে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। ওই বিক্ষোভে তাঁর সরকারের পতন হয়। ক্রমেই কর্তৃত্ববাদী হয়ে ওঠা ১৫ বছরের শাসনের পর তিনি গত বছরের আগস্টে ভারতে পালিয়ে যান। এক দশকের বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনা ছিলেন ভারতের সবচেয়ে বিশ্বস্ত আঞ্চলিক মিত্রদের একজন। তাঁর সরকার ভারতবিরোধী বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোকে দমনে সহায়ক ছিল, যারা বাংলাদেশের ভূখণ্ডকে নিরাপদ আশ্রয়স্থল হিসেবে ব্যবহার করত।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এর আগে দুই দেশের বিস্তৃত সীমান্ত সুরক্ষিত রাখার জন্য শেখ হাসিনার প্রশংসা করেন। এখন হাসিনা সরকারের পতন হওয়ায় নয়াদিল্লিতে বড় ধরনের নিরাপত্তা উদ্বেগ তৈরি হয়েছে । তারা মনে করছে, বাংলাদেশে উগ্রবাদী ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলো আবার মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশে কর্মরত ছিলেন এমন একজন ভারতীয় কূটনীতিক অনিল ত্রিগুণায়েত।
তিনি বলেন, নয়াদিল্লি শেখ হাসিনাকে কারাজীবন বা মৃত্যুদণ্ডের মুখোমুখি হতে নিজ দেশে ফেরত পাঠাবে, সে বিষয়ে তাঁর (অনিলের) যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে। শেখ হাসিনা তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলোকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে প্রত্যাখ্যান করেছেন। এটি ভারতকে এমন একটি সম্ভাব্য ভিত্তি তৈরি করার সুযোগ দিচ্ছে যে তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগগুলো ছিল রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
ভারতের প্রত্যর্পণ আইন, সেই সঙ্গে বাংলাদেশের সঙ্গে দেশটির প্রত্যর্পণ চুক্তিতেও ‘রাজনৈতিক অপরাধের’ ক্ষেত্রে ব্যতিক্রম অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, যা এ ধরনের পরিস্থিতির জন্যই মূলত যুক্ত করা হয়েছে। এটি কোনো একটি দেশকে কারও অপরাধের ধরন রাজনৈতিক হলে তাঁকে প্রত্যর্পণের আবেদন প্রত্যাখ্যানের সুযোগ দিয়েছে। অনিল ত্রিগুণায়েত বলেন, ‘ভারতকে এটাকে রাজনৈতিক অপরাধ হিসেবে দেখতে হবে, মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে নয়; যে অপরাধে তাঁকে অভিযুক্ত করা হয়েছে।’
অবশ্য অনিল ত্রিগুণায়েত উল্লেখ করেন যে শেখ হাসিনা এখনো সব আইনি প্রতিকার শেষ করেননি। তিনি রায়ের বিরুদ্ধে বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে আপিল করতে পারেন। এরপর হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে যাওয়ারও সম্ভাবনা রয়েছে। বাংলাদেশে দায়িত্ব পালন করা সাবেক এই ভারতীয় কূটনীতিক বলেন, ‘যেহেতু সব প্রতিকার শেষ হয়নি, তাই ভারত তাঁকে পাঠানোর জন্য তাড়াহুড়ো করবে না।’
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


























মন্তব্য