বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে বাংলাদেশ
প্রতীকী ছবি
এবার বাংলাদেশে গত সাড়ে ৩১ ঘণ্টায় চারবার ভূমিকম্প হয়েছে। এর মধ্যে শনিবার সকালে একবার ও সন্ধ্যায় পরপর দুবার এবং শুক্রবার সকালে একবার ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে রাজধানীসহ আশপাশের এলাকা। চারটির মধ্যে শুক্রবারের ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল সবচেয়ে বেশি। ৫ দশমিক ৭ মাত্রার তীব্র ঝাঁকুনিতে রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশ কেঁপে ওঠে। শিশুসহ ১০ জন নিহত ও ছয় শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। ঠিক তার পরদিন শনিবার (২২ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৩৬ মিনিটে নরসিংদীতে ৩ দশমিক ৩ মাত্রায় মৃদু ভূমিকম্প হয়। ঠিক তার সাড়ে সাত ঘণ্টা পর সন্ধ্যায় আবারও রাজধানীতে পরপর দুটি ভূমিকম্প হয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর জানায়, সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৪ সেকেন্ডে রিখটার স্কেলে ৩ দশমিক ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প হয়। এর এক সেকেন্ড পর সন্ধ্যা ৬টা ৬ মিনিট ৫ সেকেন্ডে দ্বিতীয়বার ভূমিকম্প হয়। রিখটার স্কেলে এটির মাত্রা ৪ দশমিক ৩। ভূতত্ত্ববিদরা বলছেন, ভারত, ইউরেশিয়া ও মিয়ানমার টেকটোনিক প্লেটের সংযোগস্থলে অবস্থান হওয়ায় বড় ভূমিকম্পের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশ। প্লেটগুলো শত শত বছর ধরে শক্তি সঞ্চয় করার ফলে যেকোনো সময় হতে পারে আরও বড় মাত্রার ভূমিকম্প।
ভূমিকম্প মোকাবিলায় সরকারের উল্লেখযোগ্য প্রস্তুতি নেই দাবি করে সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় আপাতত জনসচেতনতার বিকল্প নেই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, আমাদের প্লেটটি পূর্বদিকে তলিয়ে যাচ্ছে। এরফলে মাঝেমধ্যে সেকিং (ঝাঁকি) হচ্ছে। ১০০ বছরে বড় কোনো ভূমিকম্প না হওয়ায় শক্তি জমা হয়ে আছে, যেকোনো সময় হতে পারে আরও বড় মাত্রার ভূমিকম্প।
ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞ হুমায়ুন আখতার বলেন, ২০০৩ সালে রাঙ্গামাটিতে ভারত সীমান্তের কাছাকাছি বরকল ইউনিয়নে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ভূমিকম্প সংঘটিত হয়। এটিও অনেক শক্তিশালী ছিল। তবে ১৯১৮ সালে দেশের অভ্যন্তরে সর্বোচ্চ ৮ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছিল। তিনি বলেন, আমরা সরকারকে বারবার বলে আসছি ভূমিকম্পে মহড়ার বিকল্প নাই। সরকার ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধারকার্যের জন্য কোটি কোটি টাকার বাজেট রাখে, সেখান থেকে দুর্নীতি করতে পারে। কিন্তু যথাযথ কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয় না।
ভূমিকম্প মোকাবিলায় সরকারিভাবে গবেষণার তাগিদ দিয়ে অধ্যাপক ড. মো: আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া বলেন, পাঠ্যপুস্তকে এ সংক্রান্ত তথ্য যুক্ত করাসহ মানতে হবে, ভবন নির্মাণের নিয়ম। নগর পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, অপরিকল্পিত বসতির কারণে ভূমিকম্পের ক্ষয়ক্ষতি বাড়ছে। এই দায় কোনোভাবেই এড়িয়ে যেতে পারে না সরকার। ভূমিকম্প জনিত সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকার মধ্যে রয়েছে ঢাকাসহ দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল ও দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের কিছু অংশ।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সর্বশেষ
Office: Airport haji camp
Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com
Developed by RL IT BD
মন্তব্য