আওয়ামী লীগকে ঠেকাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার: মোস্তফা ফিরোজ
ছবি: সংগৃহীত
সিনিয়র সাংবাদিক মোস্তফা ফিরোজ বলেছেন, বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে রাজনৈতিক সংকট যখন তীব্র হচ্ছে তখন এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে আরেকটি নতুন সংকট। আগামী ১৩ নভেম্বর শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গণহত্যার মামলার রায়। এই রায় ঘোষণাকে আওয়ামী লীগ একটি বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে নিয়েছে। ইতিমধ্যে এ বিষয়টি ঘিরে প্রশাসন ও পুলিশে তৎপরতা বেড়েছে; শুরু হয়েছে দৌড়ঝাঁপ। সোমবার (১০ নভেম্বর) নিজের ইউটিউব চ্যানেলে মোস্তফা ফিরোজ এসব কথা বলেন।
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘আজ ভোরে আধাঘণ্টার ব্যবধানে ঢাকার বাড্ডা ও শাহজাদপুরে দুটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে। ন্যাশনাল মেডিক্যালের সামনে এলোপাতাড়ি গুলিতে একজন নিহত হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতার তীব্রতাও বাড়ছে।
ধারণা করা হচ্ছে, এসব ঘটনার পেছনে রাজনৈতিক দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থাকতে পারে। তবে আওয়ামী লীগের দিক থেকে যেসব রাজনৈতিক কার্যক্রম বর্তমানে নিষিদ্ধ, তারা কিন্তু একেবারে নিষ্ক্রিয় নেই।’
মোস্তফা ফিরোজ আরো বলেন, ‘শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে সম্ভাব্য রায়ের প্রতিবাদে আওয়ামী লীগ এক লাখ বেলুন ওড়ানোর পরিকল্পনা করছে। সেই বেলুনের গায়ে থাকবে প্রতিবাদমূলক স্লোগান—যা শান্তিপূর্ণ ও ব্যতিক্রমী এক কর্মসূচি হতে পারে।
যদি পরিস্থিতি সহিংস রূপ নেয় যেমন : বাসে অগ্নিসংযোগের ঘটনা দেখা যাচ্ছে তাহলে অবস্থা আরো অবনতির দিকে যেতে পারে। তবু সব মিলিয়ে পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক আকার ধারণ করছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘এখন দেশের রাজনীতিতে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করছে। আজ ১০ তারিখ, সামনে আরো তিনটি গুরুত্বপূর্ণ দিন—১১, ১২ ও ১৩ নভেম্বর। এই তিন দিনে কী ঘটে বা না ঘটে, তা নিয়েই এখন সবার নজর।
কারণ সোমবার সাত দিনের আলটিমেটাম শেষ হয়ে গেছে, ফলে রাজনৈতিক দলগুলো এখন কার্যত মুখোমুখি অবস্থানে।’
তিনি বলেন, ‘আজ মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ঠাকুরগাঁওয়ে বলেছেন, নির্বাচন পেছানোর ষড়যন্ত্র চলছে। একই সঙ্গে তিনি অভিযোগ করেছেন, মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনাকে ভুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। অর্থাৎ ইঙ্গিতটি স্পষ্ট—তিনি একদিকে সরকারের প্রতি, আবার অন্যদিকে জামায়াতের প্রতিও ইঙ্গিত করেছেন।’
মোস্তফা ফিরোজ আরো বলেন, ‘যদি আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে তাহলে আগামী দিনে ক্ষমতার প্রশ্নে বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা শুরু হবে। দুই পক্ষের বিরোধ যত বাড়বে, রাজনৈতিক উত্তেজনাও তত বৃদ্ধি পাবে। আর এই দ্বন্দ্বের সুযোগেই সুবিধা নিতে পারে আওয়ামী লীগ।’
তিনি আরো বলেন, ‘ইতিমধ্যে দেখা যাচ্ছে, জামায়াত ও বিএনপির পারস্পরিক ব্যস্ততা ও বিরোধের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগও ধীরে ধীরে মাঠে সক্রিয় হয়ে উঠছে। তাই নভেম্বরের মধ্যভাগের পর রাজনৈতিক পরিস্থিতি কোন দিকে গড়াবে—তা এখনই নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না।’
মোস্তফা ফিরোজ বলেন, ‘বর্তমানে সরকারের হাতে সব কিছুই কেন্দ্রীভূত। সরকারের নেওয়া সিদ্ধান্ত যদি বিএনপি ও জামায়াত কিছুটা ছাড় দিয়ে মেনে নেয় এবং তাদের মধ্যে রাজনৈতিক বা নির্বাচনী ঐক্য গড়ে ওঠে—যেখানে সবাই এই নীতিতে একমত হয় যে জনগণ যাকে ভোট দেবে, তারাই ক্ষমতায় আসবে, তাহলে সেটিই হবে গণতন্ত্রের সঠিক পথে ফেরা।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, ‘যদি এমন গণতান্ত্রিক মানসিকতা তৈরি না হয়, তাহলে বিপদের সম্ভাবনা রয়েছে। কারণ সেই সুযোগে আওয়ামী লীগ আবারও দ্রুত রাজনৈতিক অঙ্গনে ফিরে আসতে পারে। এমনও হতে পারে, বিএনপি বা জামায়াত—যেকোনো এক পক্ষ শেষ পর্যন্ত আওয়ামী লীগকে স্বাগত জানাতে বাধ্য হবে।’
মোস্তফা ফিরোজের মতে, জামায়াত এখন যথেষ্ট রাজনৈতিক শক্তি অর্জন করেছে এ নিয়ে সন্দেহের অবকাশ নেই। তাদের সঙ্গে আরো কয়েকটি ছোট রাজনৈতিক শক্তি যুক্ত হচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপি এখন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইস্যুকে সামনে আনছে, যা স্বাভাবিকভাবেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে এক ধরনের মানসিক সংযোগ তৈরি করে।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সর্বশেষ
Office: Airport haji camp
Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com
Developed by RL IT BD
মন্তব্য