হামাস ও ফিলিস্তিন নিয়ে সৌদির পরিকল্পনা ফাঁস

২৫ অক্টোবর ২০২৫, ১২:০৬:৪৩

ছবি: সংগৃহীত

গাজা যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে হামাসকে নিরস্ত্র এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে (পিএ) আর্থিক ও প্রশাসনিক সহায়তা দেয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সৌদি আরব। মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম মিডল ইস্ট আইয়ের হাতে আসা দেশটির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একটি অভ্যন্তরীণ নথিতে এ তথ্য উঠে এসেছে।

নথিতে বলা হয়েছে, সৌদি আরব গাজায় আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষা বাহিনী মোতায়েনের পক্ষে, যাতে হামাসের প্রভাব কমে এবং গাজায় স্থিতিশীলতা বজায় থাকে। এ বাহিনীতে অন্যান্য আরব ও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশও অংশ নিতে পারে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

নথিতে আরও বলা হয়, গাজা উপত্যকা ও ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে রিয়াদের দৃষ্টিভঙ্গি উপস্থাপন করাই মূল লক্ষ্য। হামাসকে শাসন থেকে ধীরে ধীরে সরিয়ে এবং ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষকে সংস্কার করে এটি এমনভাবে বাস্তবায়ন করা হবে যা ১৯৬৭ সালের সীমারেখায় জেরুজালেমকে রাজধানী করে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আকাঙ্ক্ষা পূরণ করবে।

সৌদি আরব বলেছে, শান্তি প্রচেষ্টাকে বাধাগ্রস্তের পাশাপাশি অভ্যন্তরীণ বিভাজন বাড়াচ্ছে হামাস। তাই তাদের প্রভাব সীমিত করাই জরুরি। এজন্য নথিতে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক চুক্তির মাধ্যমে ধাপে ধাপে নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার কথা বলা হয়েছে।

এছাড়া গাজার প্রশাসনিক ক্ষমতা ধীরে ধীরে পিএ-এর হাতে হস্তান্তর করার প্রস্তাব দেয়া হয়েছে, যাতে এটি দুই রাষ্ট্র সমাধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। নথি অনুযায়ী, মিশর, জর্ডান ও ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শ করে কাজ করবে সৌদি আরব। প্রভাবশালী পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা মানাল বিনতে হাসান রাদওয়ানের নির্দেশের উদ্ধৃতি দিয়ে নথিতে এই পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করা হয়।

২০০৭ সালে হামাস ও ফাতাহর সংঘর্ষের পর থেকে পিএ গাজায় কার্যত অনুপস্থিত। তাই সৌদি আরব চায়, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের মধ্যে সংস্কার ও দুর্নীতিবিরোধী দক্ষতা গড়ে উঠুক। জাতীয় ঐক্য অর্জন এবং কার্যকর ও স্বচ্ছ শাসন নিশ্চিত করার জন্য কর্তৃপক্ষের সংস্কার একটি মৌলিক স্তম্ভ বলেও উল্লেখ করা হয় প্রতিবেদনে।

সৌদি আরব মূলত পিএকে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে, যাতে তারা ফিলিস্তিনি জনগণকে মৌলিক সেবা দিতে পারে। যদিও নথিতে অর্থের পরিমাণ নির্দিষ্ট করা হয়নি। এছাড়া ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের ছত্রছায়ায় দলগুলোকে একীভূত করার জন্য জাতীয় সংলাপের আহ্বানও জানানো হয়েছে। এর অন্যতম লক্ষ্য জাতীয় সংহতি বৃদ্ধি করা।

এই নথি গত ২৯ সেপ্টেম্বরের। এর একদিন পর সৌদি পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে ইসরায়েলের গাজায় গণহত্যা বন্ধে আন্তর্জাতিক পদক্ষেপের আহ্বান জানান।

অন্যদিকে, ইসরায়েলের অর্থমন্ত্রী বেজালেল স্মোট্রিচ ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের ধারণা প্রত্যাখ্যান করেছেন। বৃহস্পতিবার তিনি জানান, তার দেশের সৌদি আরবের সাথে এমন কোনো চুক্তি প্রত্যাখ্যান করা উচিত যদি এটি একটি ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের বিনিময়ে করা হয়। তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, ‘সৌদি মরুভূমিতে তোমাদের উঁটে চড়তে থাকো। আমরা আমাদের অর্থনীতি, সমাজ এবং রাষ্ট্রের উন্নয়ন চালিয়ে যাব যা আমরা জানি যে কীভাবে করতে হবে।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মন্তব্য