শনিবার ২ আগস্ট, ২০২৫, ০৭:৪৫ অপরাহ্ণ
 

ইবি ক্রিকেট ক্লাবের সহায়তায় স্কুলে যাবে নাঈম

২ আগস্ট, ২০২৫ ১২:২৪:০০
ছবি প্রতিনিধি, সংবাদবেলা

মানিক হোসেন, ইবি: ছোট্ট ছেলে নাঈম। বয়স আর কতই হবে? বড়জোর আট। অথচ এতো অল্প বয়সেই জীবনের কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি হয়েছে সে। জন্মের পর থেকেই পিতা-মাতার গভীর ভালোবাসা কিংবা নিরাপত্তা কোনো কিছুই সে পায়নি পুরোপুরি। স্বপ্ন ছিল পড়াশোনা করার কিন্তু তাতেও বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে দারিদ্র্যতা। বলছি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্যাম্পাসে ঘুরে বেড়ানো ছোট্ট ছেলে নাঈমের কথা।

বাবা দ্বিতীয় বিয়ে করে সংসার ছেড়ে চলে গেছেন বহু দিন আগে। মা সকাল থেকে রাত অবধি গার্মেন্টসে শ্রম দিয়ে যান সংসার চালানোর জন্য। নাইম বড় হচ্ছে নানার বাড়িতে, বিশেষ করে নানির আদর আর কঠোর শাসনে। নাইমের জীবনে সবচেয়ে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছিল শিক্ষা। তার মা যা আয় করেন, তা দিয়ে নিত্যপ্রয়োজন মেটানোই কষ্টকর। তার উপর স্কুলের খরচ চালানো ছিল প্রায় অসম্ভব। ফলে পড়াশোনার সুযোগ পাওয়া তো দূরের কথা, ঠিকমতো খাওয়া-পরাও এক প্রকারের চ্যালেঞ্জ। এই অন্ধকারের মাঝেই হঠাৎ একটুকরো আলো হয়ে আসে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্রিকেট ক্লাব। নতুন বই ও পোশাক পেয়ে খুশিতে আত্মাহারা নাঈম।

নাঈমের নানী হাজেরা খাতুন বলেন, অর্থের অভাবে নাঈমকে স্কুলে ভর্তি করাতে পারছিলাম না। পরে ক্যাম্পাসের এই মামাদের জানালে তারা আমাকে আশ্বস্ত করেন নাঈমকে স্কুলে ভর্তি করাবেন। আমার নাতিটা স্কুলে যাচ্ছে দেখে মনটা আনন্দে ভরে যায়। আগে শুধু দুষ্টামি করত, এখন নিয়ম করে পড়তে বসবে। আমি চাই নাঈম ঠিকমতো পড়ালেখা করে মানুষের মতো মানুষ হোক।

নাইম’র স্বপ্ন পূরণে আলোর দিশারি হয়ে আসা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় (ইবি) ক্রিকেট ক্লাবের সভাপতি শেখ সাকলাইন বলেন, ইবি ক্যাম্পাসে ক্রিকেটারদের খুব আদরের নাঈম। ছোট থেকেই সে তার নানীর কাছে থাকে। তার নানী আমাদের ক্যাম্পাসে একটা দোকানে কাজ করে। আমরা ইবি ক্রিকেট ক্লাব যখন মাঠে খেলি তখন ছোট সেই নাঈম প্রায় আমাদের দেখলেই ছুটে আসে। আমরা আদর করে প্রায় তাকে অনেক কিছু কিনে দেই। একদিন তার নানী আমাকে জানায় নাঈমকে স্কুলে ভর্তি করতে হবে। আমি তাকে আশ্বস্ত করি যে ইনশাল্লাহ নাঈমকে স্কুলে ভর্তি করব। ইবি ক্রিকেট ক্লাব শুধুমাত্র ক্রিকেটে সীমাবদ্ধ নয়। আমরা সুযোগ পেলে অসহায় দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়াতে চাই। খেলাধুলা মানুষের উন্নত মন মানসিকতার বিকাশ ঘটায়।আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে নাঈম একদিন অনেক বড় হবে এবং সে দেশ ও জাতির জন্য কাজ করবে ইনশাল্লাহ।

নাঈমের জীবন এটাই প্রমাণ করে একটি সুযোগ, একটু সহযোগিতা, একটুখানি ভালোবাসা, একটা শিশুদের জীবন কতটা বদলে দিতে পারে। সমাজের প্রতিটি সুবিধাবঞ্চিত শিশুর পাশে যদি দাঁড়ায় কেউ, তাহলে হয়তো তারা হারিয়ে যাবে না, বরং গড়ে তুলবে এক নতুন আলোকিত ভবিষ্যৎ।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


মন্তব্য

সর্বশেষ

Editor & Publisher: Md. Abdullah Al Mamun

Office: Airport haji camp

Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com

Developed by RL IT BD