জানুয়ারি থেকে জুন প্রতি মাসে ঢাকায় ২০ হত্যা ও ৫ ডাকাতি: ডিএমপি

এবার রাজধানীতে প্রতি মাসে গড়ে ২০টিরও বেশি হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এছাড়াও মাসে ৫টি ডাকাতি ও ১৭৮টি চুরির ঘটনার মামলা নথিভুক্ত হয়েছে। যদিও সার্বিকভাবে ডিএমপির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে বলে মনে করছেন কর্মকর্তারা। বুধবার (৩০ জুলাই) দুপুরে মিন্টো রোডে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান, মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান।
সাম্প্রতিক সময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ডিএমপির কার্যক্রমের বিষয়ে মুহাম্মদ তালেবুর রহমান বলেন, জননিরাপত্তা বিধান ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় ঢাকা মহানগর পুলিশ নিয়মিত কার্যক্রম পরিচালনা করছে। থানা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। গতকাল ডিবি ওয়ারির একটি টিম ১২৩টি চোরাই মোবাইলসহ চক্রের ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি বলেন, মোহাম্মদপুরের কিশোর গ্যাং কব্জি কাটা গ্রুপের বিরুদ্ধে নিরাপত্তা বিঘ্নিত করাসহ নানা অভিযোগ রয়েছে। সেই কব্জি কাটা গ্রুপের আনোয়ারের নিশাত ও রাসেল ওরফে এসটি রাসেল নামে দুই সহযোগীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
ডিএমপির মামলার পরিসংখ্যান তুলে ধরে তালেবুর রহমান বলেন, চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে জুন মাস পর্যন্ত ৬ মাসে ঢাকায় মহানগরের ৫০ থানায় ৩৩টি ডাকাতি, ২৪৮টি ছিনতাই, ১২১টি খুন এবং ১০৬৮টি চুরির মামলা হয়েছে। প্রতি মাসে ২০টির অধিক হত্যা, ডাকাতি ৫টির ঘটনা ঘটেছে। এছাড়া প্রতি মাসে গড়ে ৪৬টি ছিনতাই মামলা, মাসে ৭০টি চাঁদাবাজির মামলা হয়েছে। সার্বিকভাবে ডিএমপির আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল আছে বলে মনে করছে ডিএমপি। ডিএমপির ট্রাফিক ব্যবস্থাপনার বিষয়ে ডিসি তালেব বলেন, ঢাকার ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় আমরা নিত্যনতুন কৌশল অবলম্বন করছি। বিভিন্ন ডাইভারশন, ট্রাফিক আইনে ২৪ ঘণ্টায় ২ হাজার ৮৪৫টি মামলা, ২৮২ ডাম্পিং ও ৮৩টি গাড়ি র্যাকার করা হয়েছে।
১১ দিনের আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় বিশেষ নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে ইতোমধ্যে নির্দেশনা দিয়েছে এসবি ও পুলিশ সদরদপ্তর। আইনশৃঙ্খলা বিঘ্নিত করার কোনো তথ্য আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমরা যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় ডিএমপি সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। কেউ যদি চেষ্টা করে তাহলে তাদের আইন অনুযায়ী মোকাবিলা করা হবে। এর বাইরে গোয়েন্দা তথ্য কাজে লাগিয়ে আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রাখতে কাজ করছি। রাতের অন্ধকারে থানায় বিভিন্ন দেনদরবার প্রসঙ্গে ডিসি মিডিয়া বলেন, থানায় এমন সালিশি কার্যক্রম করার কোনো সুযোগ নেই। কোনো বাদী বা আসামি চাইলে মীমাংসার বিষয় আলোচনা করতে পারে। এর বাইরে থানায় বসে দেনদরবার করার সুযোগ নেই। এ বিষয় কোনো অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মোহাম্মদপুরে ছিনতাই নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। রাজধানী জুড়ে ছিনতাই ও চাঁদাবাজি মহা উৎসব চলছে। এ বিষয় তিনি বলেন, পুলিশ যথেষ্ট সক্রিয় রয়েছে। রাজধানীর আইনশৃঙ্খলা স্থিতিশীল রয়েছে। এর বাইরে কিছু অপরাধ ঘটছে না তা নয়, তবে ঘটনা ঘটলে আমরা আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ ও সহনীয় মাত্রায় রাখতে কাজ করছি। পাশাপাশি আমাদের সদস্যদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে। সামনে নির্বাচনের প্রস্তুতি চলছে। আমাদের সদস্যদের মনোভাব পজিটিভ। নগরবাসীকে আইন মেনে চলার অনুরোধ জানিয়ে ডিএমপির এ কর্মকর্তা বলেন, আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না। অপরাধীর বিষয়ে তথ্য দিয়ে পুলিশকে সহযোগিতা করবেন। আপনাদের নিরাপত্তা ও নিরাপদ চলাচলে ডিএমপি আন্তরিকভাবে সার্বক্ষণিক কাজ করছে।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য