মাইলস্টোন দুর্ঘটনা: নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭, চিকিৎসাধীন ৭৮

সংগৃহীত
এবার রাজধানীর উত্তরায় মাইলস্টোন স্কুল অ্যান্ড কলেজের একটি ভবনে বিমানবাহিনীর প্রশিক্ষণ যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ২৭ জনে দাঁড়িয়েছে। এছাড়া আরও ৭৮ জন বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মঙ্গলবার (২২ জুলাই) সকাল ৮টার দিকে রাজধানীর জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী চিকিৎসক মো. সায়েদুর রহমান এ কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, “গতকাল রাত থেকে ১২ ঘণ্টায় এখানে (বার্ন ইনিস্টিউটে) আরও আটজনের মৃত্যুর পর সংখ্যাটি বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১০-এ। এখানে এখনও ভর্তি আছে ৪২ জন।” এছাড়া সমন্বিত সামরিক হাসপাতালে গতকাল আরও তিনজন ভর্তি হয়ে এখন সেখানে মোট ভর্তি আছে ২৭ জন। সেখানে সর্বোমোট মৃতদেহ ছিল ১৫ জনের। যেখানে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে একজন এবং উত্তরা আধুনিক হাসপাতাল থেকে একটি দেহাবশেষ নেওয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
ইতোমধ্যে ২০টি লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, “পাইলটের লাশটি মর্গে আছে এবং ছয়টি লাশের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি।” সায়েদুর রহমান জানান, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গতকাল একজনের মৃত্যুর কথা বলা হয়েছিল। সেখানে এখন তিনজন চিকিৎসাধীন, যার মধ্যে দুজনই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছে। এছাড়া গতকাল ইউনাইটেড হাসপাতালেও একজনকে মৃত অবস্থায় নিয়ে যাওয়া হয়েছিল।
সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ২৭ জনের মৃত্যুর কথা নিশ্চিত করেন তিনি। সেই সঙ্গে হাসপাতালগুলোতে মোট ৭৮ জন চিকিৎসাধীন থাকার কথাও জানান।এই চিকিৎসক বলেন, বার্ন ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে যারা আছেন, তাদের মধ্যে কয়েকজনকে ভেন্টিলেটরে রাখা হয়েছে। এমনকি সামরিক হাসপাতালে চিকিৎসাধানী থাকা বেশ কয়েকজনের অবস্থাও আশঙ্কাজনক বলে জানান তিনি। বার্ন ইনস্টিটিউটেই পাঁচজন আইসিইউতে রয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজনকে ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি।
সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালের সঙ্গে যে সমঝোতা চুক্তি আছে, সেটিকে কাজে লাগিয়ে কারিগরি সহায়তার জন্য অনুরোধপত্র পাঠানো হয়েছে বলে জানান প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী এই চিকিৎসক। এ বিষয়ে তিনি বলেন, “এই মুহূর্তে সিঙ্গাপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে উপস্থিত রয়েছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ যদি কেসগুলো দেখে মনে করে যে কাউকে সেখানে নিতে হবে, সেক্ষেত্রে তাদের সেখানে নিয়ে যাওয়া হবে।”
কিছুক্ষণ পর রক্ত সংগ্রহ শুরু হবে জানিয়ে তিনি বলেন, “যাদের রক্ত দরকার তারা আসলে শিশু। ফলে খুব বেশি রক্তের প্রয়োজন নেই।” তাই নেগেটিভ রক্তের গ্রুপ ছাড়া বাকিদের হাসপাতালে ভিড় না করতে অনুরোধ করেন তিনি। আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) জানিয়েছে, গতকাল বেলা ১টা ৬ মিনিটে রাজধানীর কুর্মিটোলার বিমানবাহিনী ঘাঁটি এ কে খন্দকার থেকে উড্ডয়নের কিছুক্ষণ পর বিমানটি স্কুল ভবনের ওপর এসে বিধ্বস্ত হয়। বেলা ১টা ১৮ মিনিটে এই খবর পায় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স।
গতকাল পরে জানা যায়, বিমানবাহিনীর এফটি-৭ বিজিআই যুদ্ধবিমান স্কুলটির চত্বরের একটি দোতলা ভবনে বিধ্বস্ত হয়েছে। প্রশিক্ষণের কাজে ব্যবহৃত চীনের তৈরি এই যুদ্ধবিমান যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে উত্তরার ওই স্কুল ভবনে আছড়ে পড়েছিল। বিমান বিধ্বস্ত হওয়ার পরপরই আগুন ধরে যায় স্কুল ভবনে। তখন দগ্ধ শিশুদের আর্তনাদ, সন্তানের খোঁজে পাগলপ্রায় মা-বাবা ও স্বজনদের আহাজারিতে ভারী হয়ে ওঠে চারপাশ। এ ঘটনায় শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত আহত হয়েছেন অন্তত ১৭১ জন।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য