১১০ রানে অলআউট পাকিস্তান

ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশ কদিন আগেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ২-১ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ জিতে এসেছে। এই সিরিজটি বাংলাদেশের জন্য বড় অনুপ্রেরণা হতে পারে। এরই মধ্যে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মধ্যকার প্রথম ম্যাচে টসে জিতে আগে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন অধিনায়ক লিটন দাস। এর মধ্যে দিয়ে দীর্ঘ ৯ ম্যাচ পর টসে জিতলেন বাংলাদেশ অধিনায়ক।
বাংলাদেশ এই ম্যাচে ২ স্পিনার ও ৩ পেসার নিয়ে মাঠে নেমেছে। শেখ মেহেদির সঙ্গে স্পিন আক্রমণে আছেন রিশাদ হোসেন। আর পেস বোলিং আক্রমণে তাসকিন আহমেদের সঙ্গে আছেন মুস্তাফিজুর রহমান ও তানজিম হাসান সাকিব। ইনিংসের প্রথম ওভারের চতুর্থ বলেই উইকেট পেতে পারত বাংলাদেশ। শেখ মেহেদী হাসানের বলে শর্ট ফাইন লেগে সহজ ক্যাচ নিতে পারেননি তাসকিন আহমেদ। দ্বিতীয় ওভারে এসে ঠিকই উইকেট তুলে নিয়েছেন তাসকিন। তিনি নিজের ওভারের পঞ্চম বলে আউট করেছেন পাকিস্তানের ওপেনার সাইম আইয়ুবকে। তাসকিনের স্টাম্প টু স্টাম্প বলে ব্যাকওয়ার্ড স্কয়ার লেগ দিয়ে দিয়ে উড়িয়ে মেরেছিলেন সাইম। সেখানে ডাইভ দিয়ে দারুণ এক ক্যাচ নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমান। ফলে দলীয় ১৮ রানেই প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান।
তাসকিনের ভুলে প্রথম ওভারে উইকেট না পেলেও দ্বিতীয় ওভারেই উইকেট পেয়েছেন মেহেদী। তিনি আউট করেছেন ৪ রান করা মোহাম্মদ হারিসকে। সেই ওভারে বোলিং করতে এসে পাকিস্তানের ব্যাটারদের তোপের মুখে পড়েন মেহেদী। তার বলে টানা দুই চার হাঁকান ফখর। এরপর সিঙ্গেল নিলে আরেকটি চার মারেন হারিসও। তবে ওভারের শেষ বলে মেহেদীকে পুল করতে গিয়ে ডিপ মিড উইকেটে শামীম পাটোয়ারিকে ক্যাচ দিয়েছেন।
৫ ওভারের মধ্যেই বাংলাদেশ পাকিস্তানের ৩ উইকেট তুলে নিয়েছে। সালমান আলী আঘাকে আউট করেছেন তানজিম সাকিব। এই পেসারের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে স্কুপ করতে চেয়েছিলেন সালমান। তবে ব্যাটে বলে করতে পারেননি। টপ এজ হয়ে উইকেটের পেছনে লিটন দাসের হাতে ক্যাচ দেন পাকিস্তান অধিনায়ক। উইকেট তুলে নিয়েছেন মুস্তাফিজুর রহমানও। এই বাঁহাতি পেসারের বলে শূন্য রানে ফিরেছেন হাসান নাওয়াজ।
মেহেদীর বল অন সাইডে ঠেলে দিয়েছিলেন ফখর জামান। পাকিস্তানের এই ব্যাটার রান নেয়ার সিগনাল না দিলেও উইকেট ছেড়ে বেরিয়ে এসেছিলেন ননস্ট্রাইক ব্যাটার মোহাম্মদ নাওয়াজ। সেই বল কুড়িয়ে মেহেদীর কাছে পাঠিয়ে দেন উইকেটরক্ষক লিটন দাস। সঙ্গে সঙ্গেই স্টাম্প ভেঙে দেন মেহেদী। রান আউট হয়ে ফেরেন ৩ রান করা নাওয়াজ।
৩৪ বলে ৪৪ রান করা ফখর জামান রান আউট হয়ে ফিরেছেন। ফলে হাফ সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়েই ফিরতে হয়েছে পাকিস্তানের এই ব্যাটারকে। ব্যক্তিগত ৪ রানে ও ৩০ রানে দুইবার জীবন পান ফখন। প্রথম ওভারে তাসকিন তার সহজ ক্যাচ ছেড়েছিলেন। এরপর মেহেদী তার ফিরতি ক্যাচ নিতে পারেননি। তবে তিনি আর তৃতীয় সুযোগ পাননি। মুস্তাফিজের বল ডিপ থার্ডম্যানে ঠেলে ২ রান নিতে চেয়েছিলেন খুশদিল। ১ রান সম্পূর্ণ হওয়ার পর সিদ্ধান্ত বদলে ফখরকে ফিরিয়ে দেন তিনি। পাকিস্তানের এই ওপেনার আর ফিরতে পারেননি।তাসকিনের থ্রুতে স্টাম্প ভেঙেছেন লিটন।
অভিজ্ঞ ফখর জামান ফিরলেও পাকিস্তানের রানের চাকা সচল রাখেন আব্বাস আফ্রিদি ও খুশদিল শাহ। দুজনে মিলে চার ছক্কার ফুলঝুরিতে বাংলাদেশকে চাপে ফেলেন। এই দুজনের ব্যাটেই ১৬ ওভারের মধ্যে দলীয় ১০০ রানে পৌঁছায় পাকিস্তান। ১৬ ওভারে তাদের সংগ্রহ দাঁড়ায় ৬ উইকেটে ১০২ রান। তবে ১৭তম ওভারে মুস্তাফিজ ফিরিয়েছেন ১৭ রান করা।
ইনিংসের শেষ ওভারে ওভারে তাসকিন আউট করেছেন ফাহিম আশরাফকে। ১০ বলে ৫ রান করা এই ব্যাটার তাসকিনের ফুলার লেন্থ বলে আউট সাইড এজ হয়ে থার্ড ম্যান অঞ্চলে ক্যাচ দিয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজের হাতে। পরের বলে রান আউট হয়েছেন সালমান মির্জা। তৃতীয় বলে তাসকিন ফিরিয়েছেন আব্বাস আফ্রিদিকে। তাসকিনের বলে টপ এজ হয়ে তিনি ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে। ফলে পাকিস্তানের ইনিংস শেষ হয় ১১০ রানে। বাংলাদেশের হয়ে সবচেয়ে সফল বোলার তাসকিনই। তিনি ২২ রানে ৩ উইকেট নিয়ে ইনিংস শেষ করেছেন। আর ৪ ওভারে মাত্র ৬ রান দিয়ে ২ উইকেট শিকার মুস্তাফিজের।
এই ম্যাচে মুস্তাফিজ ২ উইকেট নিলেও ৪ ওভারে খরচ করেছেন মাত্র ৬ রান। অন্তত কোনো ম্যাচে ৪ ওভার বল করা বোলারদের মধ্যে এটাই বাংলাদেশের কোনো বোলারের সবচেয়ে ইকোনোমিক্যাল বোলিংয়ের রেকর্ড। এর আগে ২০২৪ বিশ্বকাপে নেপালের বিপক্ষে মাত্র ১.৭৫ ইকোনোমিতে ৭ রান দিয়ে মুস্তাফিজ নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। স্পিনার রিশাদ হোসেন-যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৭ রানে ১ উইকেট পেয়েছিলেন। সেটা ২০২৪ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে আগের সিরিজে। তার ইকোনমি ছিল মাত্র ১.৭৫! বিশ্বকাপে নেপালের বিপক্ষে ৪ ওভারে ৭ রানে ৪ উইকেট নিয়েছিলেন তানজিম! ইকোনমি ছিল ১.৭৫!
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য