শনিবার ৫ জুলাই, ২০২৫, ১০:০৯ পূর্বাহ্ণ

ছাত্রী মোটা নাকি চিকন হয়েছে, দেখতে ভিডিও কল দেন ইবি শিক্ষক 

২ জুলাই, ২০২৫ ৬:৫৯:৩৯
সংগৃহীত

এবার যৌন হয়রানিসহ নানা অভিযোগ উঠেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি অ্যান্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. আজিজুল ইসলামের বিরুদ্ধে। গত ২২ জুন বিভাগের সভাপতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন প্রায় ১২ জন ছাত্রী। অভিযোগের প্রেক্ষিতে ওই শিক্ষককে বিভাগের কার্যক্রম থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। 

বুধবার (২ জুলাই) এ বিষয়টি প্রকাশ্যে আসলে নেট দুনিয়ায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অভিযোগপত্রে ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের এক ছাত্রী বলেন, স্যার আমাকে ইমোতে ভিডিও কল দেন। আমি কল রিসিভ না করায় পরে অডিও কল দেন। তখন তিনি বলেন, অনেকদিন তোমাদের দেখি না, তোমরা মোটা হয়েছো না চিকন হয়েছো দেখার জন্য ভিডিও কল দিচ্ছি। তারপর উনি বলেন, তোমার কি কথা বলার লোক আছে? আমি বলি না নেই। তখন তিনি বলেন, এখন বলছো কেউ নাই, কিছুদিন পর তো দেখবো ক্যাম্পাসে কোনো ছেলের হাত ধরে ঘুরছো।

ওই ছাত্রী আরও জানান, স্যার ক্লাসে বিভিন্ন সময় আমাকে উদ্দেশ্য করে আজেবাজে ইঙ্গিত করে বাজে কথা বলেন। আমার উচ্চতা নিয়ে তিনি কুরুচিপূর্ণ জোকস করেন। আমি বিবাহিত হওয়ায় বিয়ের পর স্বামী-স্ত্রীর ব্যক্তিগত জীবন ও সম্পর্ক নিয়ে আমাকে বিভিন্ন মন্তব্য করেন। তিনি আমাকে সবার মাঝে ক্লাসে দাঁড় করিয়ে মেন্সট্রুয়েশন সাইকেল নিয়ে কুরুচিপূর্ণ কথা বলেন, যা আমার জন্য খুবই অপমানজনক। এভাবে বিভিন্ন সময় উনি ক্লাসে বাজে ইঙ্গিতপূর্ণ কথা বলার পাশাপাশি বডি শেমিং করেন এবং হুমকি দেন যে তার কোর্সে ভালো রেজাল্ট করতে পারব না।

বিভাগটির আরও শিক্ষার্থীরা একই অভিযোগ তুলেছেন, অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুল ইসলাম দীর্ঘদিন থেকে ছাত্রীদের সাথে কুরুচিপূর্ণ ও অশালীন ব্যবহার করে আসছেন। হোয়াটসঅ্যাপে কুরুচিপূর্ণ মেসেজ প্রদান, ইচ্ছাকৃতভাবে পরীক্ষার নম্বর কমিয়ে দেওয়া, রুমে ডেকে ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন নিয়ে আপত্তিকর জিজ্ঞাসা, ক্লাসে সবার সামনে আজেবাজে ইঙ্গিত করা, ছাত্রীদের রাতে ভিডিও কল দেওয়া, কল না ধরলে রেজাল্ট খারাপ করানোর হুমকি, বিবাহিত ছাত্রীদের ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে আপত্তিকর মন্তব্য, নিজের আন্ডারে প্রজেক্ট করতে পছন্দের ছাত্রীদের বাধ্য করা ও ছাত্রীদের বডি শেমিং করাসহ নানাভাবে হেনস্তা করতেন। তবে এতোদিন শিক্ষার্থীরা ভয়ে তার বিরুদ্ধে মুখ খোলার সাহস পাননি।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক আজিজুল ইসলাম বলেন, আমি কোনো শিক্ষার্থীকে হেনস্তা করিনি। বরং তারা আমার কথা ও কাজকে ভুলভাবে নিয়েছে। পরিকল্পিত ও ষড়যন্ত্রমূলকভাবে আমার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে অসত্য অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক ড. এ কে এম নাজমুল হুদা বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পরে আমরা নিয়মানুযায়ী একাডেমিক কমিটির সভায় তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছি। প্রাথমিকভাবে আমরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছি। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত তিনি বিভাগের সকল কার্যক্রম থেকে বিরত থাকবেন।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


মন্তব্য

Editor & Publisher: Md. Abdullah Al Mamun

Office: Airport haji camp

Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com

Developed by RL IT BD