ভারতীয় বাহিনীর সঙ্গে মিয়ানমারের সংঘর্ষে নিহত ১০, সীমান্তে আতঙ্ক

২ জুন ২০২৫, ৫:৫৫:০০

সংগৃহীত

এবার ভারত-মিয়ানমার সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর সাথে মিয়ানমারের পিপলস ডিফেন্স ফোর্সেস (পিডিএফ)-এর অংশ পিকেপি গোষ্ঠীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে তিন কিশোরসহ পিকেপির ১০ সদস্য নিহত হয়। গত ১৪ মে ভারতের মণিপুর রাজ্যের চান্দেল জেলার সীমান্তবর্তী এলাকায় ঘটে এ ঘটনা। আল জাজিরার খবরে বলা হয়, এই হতাহতের ঘটনায় ভারত ও মিয়ানমারের মধ্যে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র মতানৈক্য।

এদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর দাবি, ১৪ মে ‘গোপন গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে’ আসাম রাইফেলসের একটি দল অভিযানে গেলে ‘সন্দেহভাজন সন্ত্রাসীরা’ তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়। এ সময় ভারতীয় বাহিনী পাল্টা গুলি চালালে ১০ জন নিহত হয়। তাদের কাছ থেকে একে-৪৭ রাইফেল ও একটি রকেটচালিত গ্রেনেড উদ্ধার করা হয় বলেও জানায় দেশটির সেনাবাহিনী।

কিন্তু মিয়ানমারের নির্বাসিত সরকার ন্যাশনাল ইউনিটি গভর্নমেন্ট -এনইউজির পক্ষ থেকে জানানো হয়, নিহতরা সশস্ত্র সংঘর্ষে জড়াননি। তাদের ভারতের মাটিতে গ্রেপ্তার করে নির্যাতনের মাধ্যমে হত্যা করা হয়েছে। নিহতদের মরদেহের অবস্থাও অত্যন্ত করুণ ছিল—পঁচে যাওয়া শরীরে পোকা জন্ম নিয়েছিল।

১৪ মের এই ঘটনার পর তামু এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে আতঙ্ক। এ ধরনের ঘটনা আগে কখনো ঘটেনি বলে জানান স্থানীয়রা। কিন্তু এ ধরনের ঘটনা শুরু হওয়ায় আরও সংঘাতের আশঙ্কা বাড়ছে অঞ্চলটিতে। বিশেষ করে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা শরণার্থীরা চরম অনিশ্চয়তায় ভুগছেন।

গত ১২ মে পিকেপির ওই ১০ সদস্য মিয়ানমারের সামরিক বাহিনীর আক্রমণ এড়িয়ে তামু এলাকায় নতুন ক্যাম্পে পৌঁছান। তারা তাদের উপস্থিতি সম্পর্কে আগে থেকেই ভারতীয় সেনাবাহিনীকে জানিয়েছিলেন। এমনকি ভারতীয় সেনারা ক্যাম্প পরিদর্শন করে বলেও দাবি করেন স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত একটি সংগঠনের সদস্য থিদা (ছদ্মনাম)।

সীমান্ত এলাকায় চলমান কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণকাজে বাধা দিতেই বিদ্রোহীরা আক্রমণ চালায় এবং সে কারণে পাল্টা অভিযানে তাদের হত্যা করা হয় বলে পরবর্তীতে দাবি করে ভারতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়।

তবে এই ঘটনার পর সীমান্ত বেড়া নিয়েও নতুন করে বিতর্ক শুরু হয়েছে। মিয়ানমার ও ভারতের বহু নৃগোষ্ঠী সীমান্তের দুই পাশে যুগ যুগ ধরে ‍উন্মুক্ত সীমান্তব্যবস্থার মাধ্যমে যাতায়াত চালিয়ে আসছিল। অভিযোগ উঠেছে, এখন ভারত সেই সীমান্তে বেড়া নির্মাণ করে ‘ভৌগোলিক বিভাজন’ তৈরির চেষ্টা করছে। মিয়ানমার ও উত্তর-পূর্ব ভারতের এই পরিস্থিতি ভারত-মিয়ানমার বিদ্রোহী গোষ্ঠীগুলোর মধ্যে আগের ‘নীরব সমঝোতা’র ব্যত্যয় ঘটিয়েছে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। সূত্র: আল জাজিরা

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মন্তব্য