‘বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না’, ছাত্রীর বিরুদ্ধে ছাত্রদল নেতার মামলা

এবার ‘বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায়’ সাবেক ছাত্রদল নেতার মামলায় আসামি হয়েছেন ময়মনসিংহের ত্রিশালে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোছা. আমেনা আক্তার পলি। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী।
৭ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (ভিসি) প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলমের বরাবরে এসংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের হলে ঘটনাটি নিয়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার দাবিতে এই আবেদনটি দায়ের করেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী আমেনা আক্তার পলি।
এর আগে, গত ৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের প্রতিষ্ঠাতা কমিটির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক ও বাংলা ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী মো. আশিকুর রহমান বাদী হয়ে ময়মনসিংহ দ্রুত বিচার আদালতে এই মামলাটি দায়ের করেন।
সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. আজমত আলী মামলা দায়েরের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, আদালত বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে ঘটনাটি পিবিআই পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোছা. আমেনা আক্তার পলি ভালুকা উপজেলার মল্লিকবাড়ী ইউনিয়নের মামরিশপুর গ্রামের বাসিন্দা। তার বাবা আবু সাঈদ ওরফে মো. ছাইদুল ইসলাম পেশায় ট্রাকচালক। অপরদিকে মামলার বাদী আশিকুর রহমান একই উপজেলার ভরাডুবা গ্রামের বাসিন্দা মো. চাঁন মিয়ার ছেলে।
সূত্র জানায়, ওই মামলায় মোছা. আমেনা আক্তার পলিকে ৬৯ নম্বর আসামি উল্লেখ করে বিগত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে মোট ২১০ জনকে আসামি করা হয়। এতে নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক নেতা-নেত্রী, শিক্ষক ও কর্মকর্তারাও আসামি হয়েছেন।
মামলার এজাহারে বাদী দাবি করেন, আমেনা আক্তার পলি নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সক্রিয় সদস্য এবং বিগত জুলাই-আগস্ট আন্দোলনে হামলার ঘটনায় জড়িত।
তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আমেনা আক্তার পলি। তিনি বলেন, ২০২১ সালের শেষদিকে মামলার বাদী ও সাবেক ছাত্রদল নেতা মো. আশিকুর রহমানের সঙ্গে আমার পরিচয়। এরপর তিনি আমাকে পারিবারিকভাবে বিয়ের প্রস্তাব দেন। এতে আমার পরিবার সম্মত হলে হঠাৎ আশিকুর রহমান আমার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেন। এ ঘটনার কিছুদিন পর পারিবারিকভাবে অন্যত্র আমার বিয়ের দিনক্ষণ ঠিক হলে বিষয়টি জানতে পেরে আশিকুর রহমান আবারও বিয়ের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এবার আমার পরিবার রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমাকে এবং আমার পরিবারকে মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেন। মূলত ওই ঘটনার জের ধরেই ভালুকা থানার একটি রাজনৈতিক মামলায় আমার বাবা আবু সাঈদ ওরফে মো. ছাইদুল ইসলামকে আসামি করা হয়েছে। একইসঙ্গে হয়রানিমূলকভাবে জুলাই আন্দোলনে হামলার ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগ এনে অপর একটি মামলায় আমাকেও আসামি করা হয়েছে।
পলি আরও বলেন, আমি বা আমার পরিবারের কেউ কখনো আওয়ামী লীগ বা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত না। মূলত বাদীর দেওয়া বিয়ের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় মিথ্যা অভিযোগ তুলে আমাকে ছাত্রলীগ বানিয়ে এবং আমার বাবাকে আওয়ামী লীগ নেতা বানিয়ে হয়রানিমূলক মামলায় আসামি করা হয়েছে। আমি এ ঘটনার তদন্তপূর্বক বিচার দাবি করছি।
ঘটনার বিষয়ে জানতে চাইলে মো. আশিকুর রহমান বলেন, যে কেউ যে কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দিতেই পারে। এটা কোনো বিষয় নয়। আমি মামলা করেছি জুলাই আন্দোলনে হামলায় জড়িতদের বিরুদ্ধে। এই মামলায় যারা আসামি, তারা সবাই হামলার ঘটনায় জড়িত ছিল।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, এ ধরনের একটি অভিযোগ আমার কাছে দায়ের হয়েছে। তবে এ নিয়ে আমার কিছু করার নাই। মামলার বিষয়টি আইন এবং আদালত দেখবে।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সর্বশেষ
Office: Airport haji camp
Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com
Developed by RL IT BD
মন্তব্য