২৪ ঘণ্টা লাশ আটকে সম্পত্তির ভাগবাটোয়ারা স্ত্রী সন্তানদের

সংগৃহীত
এবার চাঁপাইনবাবগঞ্জের সদর উপজেলার সুন্দরপুর ইউনিয়নের বড় মরাপাগলা গ্রামে সম্পত্তি নিয়ে পারিবারিক বিরোধের জেরে এক ব্যক্তির লাশ দাফন বিলম্বিত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। মৃত ব্যক্তি মাজেদ বিশ্বাসের মরদেহ দীর্ঘ ২৪ ঘণ্টা ফ্রিজিং অ্যাম্বুলেন্সে থাকার পর গ্রাম্য সালিশের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি হলে সোমবার (২৭ এপ্রিল) সন্ধ্যায় দাফন সম্পন্ন হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মাজেদ বিশ্বাসের প্রথম স্ত্রীর ১০ সন্তানের মধ্যে তিনজন মৃত্যুবরণ করেছেন। জীবিত সাত সন্তানের মধ্যে চার মেয়ে ও তিন ছেলে রয়েছেন। প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর হামফুল বেগম নামের এক নারীকে দ্বিতীয় বিয়ে করেন তিনি। তবে এ সংসারে কোনো সন্তান হয়নি।
ঘটনার সূত্রপাত মাস ছয়েক আগে, যখন মাজেদ বিশ্বাস অসুস্থ হয়ে পড়েন। সেই সময় তার দুই ছেলে পুলিশের উপপরিদর্শক লতিফুর রহমান ও কনস্টেবল আবদুল জাব্বার চিকিৎসার কথা বলে বাবাকে বাড়ি থেকে নিয়ে গিয়ে তার ৮ বিঘা জমি নিজেদের ও এক ভাতিজার নামে রেজিস্ট্রি করে নেন। পরে ১৬ এপ্রিল হামফুল বেগমের নামে তালাকনামার একটি উকিল নোটিশ পাঠানো হয়, যা তিনি গ্রহণ করেননি। এতে ক্ষোভে ফেটে পড়েন দ্বিতীয় স্ত্রী ও মেয়েরা।
গত রোববার রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাজেদ বিশ্বাসের মৃত্যু হয়। পরে ছেলেরা তার মরদেহ গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসলে, দ্বিতীয় স্ত্রী হামফুল বেগম তার স্বজন ও মেয়েদের নিয়ে দাফনে বাধা দেন। এরপর গ্রাম্য সালিশের আয়োজন করা হয়।
সালিশে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান মাস্টার, তিন ইউপি সদস্য ও এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তি। দীর্ঘ আলোচনার পর মাজেদের দুই ছেলে স্বীকার করেন, তারা প্ররোচনায় সম্পত্তি লিখে নিয়েছেন এবং সৎ মা হামফুল বেগমকে তালাক দিতে বাবাকে রাজি করিয়েছিলেন। ক্ষমা চাওয়ার পর সিদ্ধান্ত হয়, বাবার সম্পত্তি সকল অংশীদারের মাঝে আইনানুগভাবে সমবণ্টন হবে।
তবে সম্পত্তি রেজিস্ট্রির প্রক্রিয়া সম্পন্ন হতে সময় লাগবে বিধায়, সাবেক চেয়ারম্যান ইয়াসিন আলীর ছেলে কামরুল ইসলামের কাছে একটি ফাঁকা চেক জামানত রাখা হয়। খারিজ ও রেজিস্ট্রির কাজ সম্পন্ন হওয়ার পর চেকটি ফেরত দেয়া হবে বলে সিদ্ধান্ত হয়।
পরে পরিবার ও স্থানীয়দের সম্মতিতে সন্ধ্যা সোয়া ৭টায় মাজেদ বিশ্বাসের দাফন সম্পন্ন হয়। হামফুল বেগম বর্তমানে স্বামীর বাড়িতে অবস্থান করছেন। তার পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সালিশে হওয়া সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন না হলে আইনি পদক্ষেপ নেয়া হবে। এ বিষয়ে মাজেদের ছেলে লতিফুর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য