বন্ধুকে ছাত্রলীগ সাজিয়ে পুলিশে দিয়ে তার প্রেমিকাকে ধর্ষণ ছাত্রদল নেতার!

সংগৃহীত
এবার নেত্রকোনার দুর্গাপুর উপজেলায় বন্ধুর হবু বউকে (১৭) ধর্ষণের সময় ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় (২৬) নামে এক ছাত্রদল নেতাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ফয়সাল আহমেদ দুর্জয় দূর্গাপুর উপজেলার চন্ডিগর গ্রামের মজিবর রহমানের ছেলে। তিনি উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) রাতে দূর্গাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুল হাসান এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ওই ছাত্রী নেত্রকোনা শহরের বাসিন্দা। তিনি রাজধানীর একটি কলেজে সম্মান তৃতীয় বর্ষে পড়াশোনা করেন। ওই ছাত্রীর সঙ্গে নেত্রকোনা জেলার কলমাকান্দা উপজেলার বাসিন্দা ও জেলা শহরের একটি কলেজের সম্মান তৃতীয় বর্ষের এক ছাত্রের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সম্প্রতি উভয়ের পরিবারের সিদ্ধান্তে তাদের বিয়ে পাকাপাকি হয়। এ উপলক্ষে তারা সোমবার দুর্গাপুরে ঘুরতে যান।
তবে ওই ছাত্রের সঙ্গে ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমেদের বন্ধুত্ব সম্পর্ক থাকায় তার কথামতো তারা সেখানে একটি হোটেলে উঠেন। সোমবার বিকেল ৩টার দিকে ওই ছাত্র হোটেলে থেকে বের হয়ে খাবার কিনতে যান। এ সময় ওই ছাত্রী হোটেলে অবস্থান করছিলেন। এ সুযোগে ফয়সাল পুলিশকে জানান তার বন্ধু ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। পুলিশ যেন দ্রুত তাকে গ্রেপ্তার করে। খবর পেয়ে পুলিশ ওই ছাত্রকে আটক করে।
এদিকে সুযোগ বুঝে ফয়সাল ওই ছাত্রীর কক্ষে ঢুকে তাকে ধর্ষণ করেন। আটক হওয়ার পর ওই ছাত্র পুলিশকে জানান, তার হবু স্ত্রী (ওই ছাত্রী) হোটেলের কক্ষে খাবারের জন্য অপেক্ষা করছেন। পরে পুলিশ ওই ছাত্রকে নিয়ে হোটেলের কক্ষে গেলে দরজা বন্ধ অবস্থায় ছাত্রীর চিৎকার শুনে অভিযান চালায়। এ সময় ছাত্রীকে উদ্ধারসহ ছাত্রদল নেতা ফয়সাল আহমদকে আটক করা হয়।
ওসি জানান, মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার বিরিশিরি এলাকার এক রিসোর্ট থেকে অনৈতিক কাজে (ধর্ষণ) লিপ্ত থাকা অবস্থায় দুর্জয়কে গ্রেপ্তার করা হয়। এ সময় রিসোর্টে দায়িত্বরত দুইজনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়। এ ছাড়া ভুক্তভোগীর হবু স্বামী ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী মো. মুন্না মিয়া ও ভুক্তভোগী সবাই থানা হেফাজতে আছেন।’ এ ঘটনায় ভুক্তভোগী নিজে বাদী হয়ে ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়ের বিরুদ্ধে জোরপূর্বক ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, সোমবার (২৮ এপ্রিল) বিকেলে ভুক্তভোগীর হবু স্বামী মুন্না মিয়া দূর্গাপুর ঘুরতে নিয়ে যান। পরে সন্ধ্যা হয়ে গেলে বিরিশিরি রিসোর্টে রুম ভাড়া নিয়ে রাত্রযাপন করেন। মঙ্গলবার দুপুরে মুন্না ব্যক্তিগত কাজে শহরে যান। কিছুক্ষণ পর দরজায় শব্দ পেয়ে ভুক্তভোগী তার স্বামী এসেছেন ভেবে দরজা খুলেন। তখন তিনি ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে দেখতে পান। দুর্জয় তার হবু স্বামী মুন্নার বন্ধু হওয়ায় ভুক্তভোগীর পরিচিত ছিল। পরে কথা বলার জন্য তখন দুর্জয় রুমের ভেতরে যান। কথা বলার এক পর্যায়ে দুর্জয় তাকে ঝাপটে ধরেন এবং জোরপূর্বক ধর্ষণ করেন। এ সময় তার ডাক চিৎকারে আশপাশের লোকজন ও পুলিশ তাকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।
ধর্ষণ ও আটকের বিষয়টি নিশ্চিত করে দুর্গাপুর থানার ওসি মাহমুদুল হাসান বলেন, এ ঘটনায় ভুক্তভোগী বাদী ধর্ষণের মামলা দায়ের করেছেন। এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বুধবার (৩০ এপ্রিল) সকালে দুর্জয়কে আদালতে সোপর্দ করা হবে। অন্য আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদের পর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নেত্রকোনা জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক অনিক মাহবুব জানান, কেন্দ্রীয় কমিটির নির্দেশে অনৈতিক কাজে লিপ্ত থাকায় দুর্গাপুর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ন-আহ্বায়ক ফয়সাল আহমেদ দুর্জয়কে বহিষ্কার করা হয়েছে। ছাত্রদল কোনো অন্যায়কে প্রশ্রয় দেয় না।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য