নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের সংস্কার চায় ইবির সিপিআর

ছবি: প্রতিনিধি, সংবাদ বেলা
মানিক হোসেন, ইবি: নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশনের প্রতিবেদনের আলোকে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে(ইবি) গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। মঙ্গলবার (২২এপ্রিল) বেলা ১১টায় আইন অনুষদের সভাকক্ষে এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকটির আয়োজন করেন সেন্টার ফর পিচ অ্যান্ড রিসার্চ। এতে কমিশনের প্রতিবেদন কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক দাবি করে তা বাতিল, নতুন সংস্কার কমিশন গঠনের দাবি জানান সংগঠনটি।
অধ্যাপক ড. আ ছ ম তরিকুল ইসলামের সভাপতিত্বে সেমিনারে প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুজ্জামান এবং মডিরেটর ড. মোঃ আবু সিনা।
অধ্যাপক ড. মোঃ কামরুল হাসানের সঞ্চালনায় আলোচক হিসেবে ছিলেন অধ্যাপক ড. মোঃ নাছির উদ্দিন মিঝি, অধ্যাপক ড. মোঃ ময়নুল হক, অধ্যাপক ড. আবু বকর মোঃ জাকারিয়া। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ধর্মতত্ত্ব অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আ ব ম সিদ্দিকুর রহমান আশ্রাফী, ড. হামিদা খাতুন, ড. খন্দকার আরিফা আক্তার ও কেন্দ্রীয় মসজিদের পেশ ইমাম আশরাফ উদ্দিন খান।
বৈঠকে ইসলামী উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামী পারিবারিক আইন নিয়ে যে পর্যবেক্ষণ ও সুপারিশ কমিশন দিয়েছে সে-সম্পর্কে আপত্তি তোলে আলোচকবৃন্দরা বলেন, নারী অধিকার সংস্কার কমিশন কর্তৃক যে প্রস্তাব তৈরি করা হয়েছে, সসেখানে অত্যন্ত আপত্তিকরভাবে ধর্মীয় বিধিবিধান, বিশেষ করে ইসলামি উত্তরাধিকার আইন ও ইসলামি পারিবারিক আইনকে নারীর প্রতি বৈষম্যের কারণ হিসেবে আখ্যা দেওয়া হয়েছে। এই ধরনের বিতর্কিত, ইসলামবিদ্বেষী, ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতকারী, কোরআন-সুন্নাহর সঙ্গে সাংঘর্ষিক, ন্যাক্কারজনক কটাক্ষপূর্ণ প্রস্তাব দেওয়ার কারণে এই কমিশন বাতিলের দাবি করছি।
আলোচকবৃন্দরা বলেন, যারা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করে না, যাদেরকে কেউ চিনে না, তারা এ কমিশনে কাজ করেছে। কমিশনে মুসলিম, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ধর্মের প্রতিনিধিত্ব করে এমন কাউকে রাখা হয়নি।
এ কমিশনের সাথে জড়িত ব্যক্তিরা এ অঞ্চলের ধর্মীয়, সামাজিক, রাজনৈতিক বাস্তবতা সম্পর্কে অজ্ঞ। তারা নারীর অধিকারের কথা বলে পাশ্চাত্যের প্রেসক্রিপশন এদেশে বাস্তবায়ন করতে চায়। স্পষ্টতই এ প্রতিবেদনে ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব লক্ষ্যণীয়। আমাদের এখন থেকে এর বিরুদ্ধে সোচ্চার থাকতে হবে। কোনো ভাবেই পাশ্চাত্যের চেপে দেওয়া কোনো আদর্শকে প্রতিষ্ঠা হতে দেওয়া যাবে না।
উল্লেখ্য, বেসরকারি সংস্থা ‘নারীপক্ষ’র প্রতিষ্ঠাতা সদস্য শিরীন পারভীন হককে প্রধান করে গত ১৮ নভেম্বর নারী বিষয়ক সংস্কার কমিশন গঠন করে অন্তর্বর্তী সরকার।কমিটি সরকারের প্রধান উপদেষ্টার কাছে ৪৩৩টি সুপারিশ করে প্রতিবেদন জমা দেয়।
কমিশন মোটা দাগে সংবিধান, আইন ও নারীর অধিকার— এ তিন বিষয়ে সুপারিশ করেছে, যেখানে সমতা ও সুরক্ষার ভিত্তি জোরালো করার কথা বলা হয়েছে। সুপারিশগুলো অন্যতম হলো- অভিন্ন পারিবারিক আইনের মাধ্যমে সব ধর্মের নারীদের জন্য বিয়ে, তালাক, উত্তরাধিকার ও ভরণপোষণে সমান অধিকার নিশ্চিত করা। অভিভাবক ও প্রতিপাল্য আইন, ১৮৯০ সংশোধন করে সন্তানের ওপর নারীর জন্য সমান অধিকার নিশ্চিত করা। সংসদীয় আসন বাড়িয়ে ৬০০ করে সেই আসন থেকে ৩০০ আসন নারীর জন্য সংরক্ষিত রেখে সরাসরি নির্বাচন। শ্রম আইন সংশোধন করে যৌনকর্মীদের মর্যাদা ও শ্রম অধিকার নিশ্চিত করা।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
মন্তব্য