৫ লাখ শিক্ষক-কর্মচারীকে অবসর সুবিধা দিতে হাইকোর্টের রায়

এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ৫ লক্ষাধিক শিক্ষক ও কর্মচারীকে ৬ মাসের মধ্যে অবসর সুবিধা প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বৃহস্পতিবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন। আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া।
হাইকোর্ট বলেছে, এটা চিরন্তন সত্য যে শিক্ষকদের রিটায়ারমেন্ট বেনিফিট পেতে বছরের পর বছর ঘুরতে হয়। এই হয়রানি থেকে তারা কোনোভাবেই পার পান না। একজন প্রাথমিকের শিক্ষক কত টাকা বেতন পান, সেটাও বিবেচনায় নিতে হবে। এজন্য তাদের অবসরভাতা ৬ মাসের মধ্যে দিতে হবে। এই অবসরভাতা পাওয়ার জন্য শিক্ষকরা বছরের পর বছর দ্বারে দ্বারে ঘুরতে পারে না।
এর আগে গত সোমবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে রুলের শুনানি শেষ হয়। পরদিন মঙ্গলবার হাইকোর্টের বিচারপতি নাইমা হায়দার এবং বিচারপতি কাজী জিনাত হকের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রায়ের জন্য আজকের দিন ধার্য করেছিলেন।
আদালতে রিটকারী শিক্ষক ও কর্মচারীদের পক্ষে মামলাটি পরিচালনা করছেন আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। তিনি জানান, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী কল্যাণ ট্রাস্ট প্রবিধানমালা-১৯৯৯-এর প্রবিধান-৬ এবং বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষক ও কর্মচারী অবসর সুবিধা প্রবিধানমালা-২০০৫-এর প্রবিধান-৮ অনুযায়ী শিক্ষক ও কর্মচারীদের মূল বেতনের দুই শতাংশ এবং চার শতাংশ কেটে নেওয়ার বিধান ছিল। যার বিপরীতে শিক্ষকদের ট্রাস্টের তহবিল থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের কিছু আর্থিক সুবিধা দেওয়া হতো।
কিন্তু বিগত ১৯ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে এসব প্রবিধানমালা সংশোধনপূর্বক চার শতাংশ ও ছয় শতাংশ করে দু’টি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। এতে অতিরিক্ত টাকা কেটে নেওয়ার বিপরীতে তাদের কোনো বাড়তি আর্থিক সুবিধা দেওয়ার বিধান করা হয়নি। এরপর ১৫ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মাউশি একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে এপ্রিল ২০১৯ মাসের বেতন থেকে চার শতাংশ ও ছয় শতাংশ টাকা যথাক্রমে অবসর সুবিধা বোর্ড ও কল্যাণ ট্রাস্টে জমার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেয়। ফলে বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রায় পাঁচ লাখ শিক্ষক ও কর্মচারী আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থেকে ক্ষুব্ধ হন এবং ১৫ এপ্রিল ২০১৯ তারিখে মাউশির জারি করা প্রজ্ঞাপনটি চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে একটি রিট করেন।
সেই রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে ২০১৯ সালের ৮ ডিসেম্বর বিচারপতি এম এনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন। রুলে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জারি করা প্রজ্ঞাপনটি কেন অবৈধ হবে না, তা জানতে চাওয়া হয় এবং বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
পরবর্তীতে নতুন একটি প্রবিধানমালা জারি করে শিক্ষক-কর্মচারীদের অবসরের ছয় মাসের মধ্যে কেটে নেওয়া ছয় শতাংশ ও চার শতাংশ সর্বমোট ১০ শতাংশ অর্থের বিপরীতে সুবিধা দেওয়ার নির্দেশনা চেয়ে স্যাপ্লিমেন্টারি রুলের জন্য আবেদন দাখিল করেন। শুনানির পর বিচারপতি জাফর আহমেদ এবং বিচারপতি মো. আখতারুজ্জামানের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন এবং বিবাদীদের চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দেওয়ার নির্দেশ দেন। ওই রুলের শুনানি শেষে রায়ের জন্য আজকের ২২ ফেব্রুয়ারি দিন ঠিক করেন আদালত।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সর্বশেষ
Office: Airport haji camp
Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com
Developed by RL IT BD
মন্তব্য