রবিবার ৮ জুন, ২০২৫, ০৬:২১ অপরাহ্ণ

জ্ঞান ফেরেনি মাগুরায় ‘ধর্ষণের শিকার’ সেই শিশুটির, পাশে বসে কাঁদছেন মা

৮ মার্চ, ২০২৫ ১:৪৫:২৪
সংগৃহীত

এবার মুমূর্ষু অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া মাগুরার শিশুটি এখনো অচেতন। তার অবস্থা আরও অবনতির দিকে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, তারা আগামী ২৪ ঘণ্টা পর্যবেক্ষণে রাখবেন। আজ শনিবার (৮ মার্চ) সকালে চিকিৎসকদের বরাত দিয়ে শিশুটির ফুপাতো ভাই এ তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পেডিয়াট্রিক ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিট (পিআইসিইউ) এর সামনে দাঁড়িয়ে শিশুটির ফুপাতো ভাই বলেন, “শনিবার সকালে সর্বশেষ পর্যবেক্ষণকালে আরও ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছেন চিকিৎসকরা।”

তিনি বলেন, ‘‘ওর পার্লস রেট কমছে। গতকাল ৪% দেখালেও আজ (শনিবার) সকালে ডাক্তার বলল ৩%-এ তা নেমে এসেছে। জ্ঞান ফেরেনি এখনও। আজ সকালে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছে চিকিৎসকরা। ওনারা জানিয়েছে ২৪ ঘণ্টা না গেলে কিছু বলা যাচ্ছে না। তবে অবস্থা অবনতির দিকেই যাচ্ছে।” এদিকে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. আসাদুজ্জামান বলেন, “ধর্ষণের শিকার শিশুটির শারীরিক অবস্থা খুবই খারাপ। শিশুটির জিসিএস মাত্রা ৪-এ নেমে এসেছে। হত্যার চেষ্টা করার সময়ে গলাতে যে আঘাত করা হয়েছিল সেটার জন্য তার শ্বাসপ্রশ্বাসের সমস্যা হচ্ছে, শরীরে জ্বর আছে এবং নিউমোনিয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। আপনারা সবাই তার জন্য দোয়া করুন।”

এদিকে, হাসপাতালের বিছানায় চিকিৎসা চলছে আট বছরের শিশুটির। কথা বলছে না, নড়াচড়াও নেই। পাশে বসে কাঁদছেন তার মা। এক হাত দিয়ে মেয়ের মাথা স্পর্শ করছেন, আরেক হাতে নিজের চোখের পানি মুছছেন। মেয়ের করুণ অবস্থা দেখে বারবার মূর্ছা যাচ্ছেন তিনি। এর আগে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি হলে শুক্রবার রাতে শিশুটিকে লাইফ সাপোর্ট দেওয়া হয়। ঢামেক হাসপাতালের উপ-উপরিচালক আশরাফুল আলম বলেন, “শিশুটির জিসিএস মাত্রা ৪ এ নেমে এসেছে।”

শিশুটির মামা ইউসুফ বিশ্বাস বলেন, “শিশুটির জ্ঞান না ফেরায় গত রাতে তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়। এখনও তার অবস্থা একই রকম রয়েছে।” পুলিশ ও ভুক্তভোগী শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায়, বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে আনা হয়। সেখান থেকে দুপুরেই উন্নত চিকিৎসার জন্য ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরে সেখান থেকে পাঠানো হয় ঢামেকে।

শিশুটির পরিবারের সদস্যরা জানান, তাদের বাড়ি মাগুরার শ্রীপুর উপজেলায়। শিশুটি কয়েক দিন আগে তার বড় বোনের (শ্বশুর) বাড়িতে বেড়াতে এসেছিল। বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে অচেতন অবস্থায় শিশুটিকে মাগুরা ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে আসেন তার বোনের শাশুড়ি। পরে শিশুটির মা হাসপাতালে আসেন। ওই হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তাৎক্ষণিকভাবে পরীক্ষা করে দেখা গেছে, শিশুটির গলায় একটা দাগ আছে। মনে হচ্ছে, কিছু দিয়ে চেপে ধরা হয়েছিল। শরীরের বেশ কিছু জায়গায় আঁচড় আছে। তার যৌনাঙ্গে রক্তক্ষরণ হয়েছে।

এর আগে মাগুরা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আইয়ুব আলী বলেন, ‘‘শিশুটির সঙ্গে কী ঘটেছে, সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। শিশুটি অচেতন অবস্থায় আছে। যে বাসায় সে বেড়াতে এসেছিল, ধারণা করা হচ্ছে, সেখানেই কোনো ঘটনা ঘটেছে। পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে শিশুটির দুলাভাই ও বোনের শ্বশুড়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য হেফাজতে নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে।’’

মেয়েটির মা জানান, তার মেয়ের এখনও জ্ঞান ফেরেনি। ঘটনার সময় ওই বাড়িতে মেয়ে তখন একাই ছিল। এ কারণে কে তাকে ধর্ষণ করেছে- তা তাৎক্ষণিকভাবে বলতে পারছেন না তারা। মাগুরা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক সুবাস রঞ্জন হালদার বলেন, “মেয়েটিকে প্রথমে শ্বাসকষ্টের রোগী হিসেবে হাসপাতালে আনা হয়। পরে মেডিসিন বিভাগে নিয়ে গেলে ধর্ষণ ও হত্যার অপচেষ্টার আলামত পাওয়া যায়। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।”

এদিকে মাগুরা হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানান, তাৎক্ষণিক পরীক্ষা করে দেখা গেছে শিশুটির গলায় একটা দাগ আছে। মনে হচ্ছে, কিছু দিয়ে সেখানে চেপে ধরা হয়েছিল। শরীরের বেশ কিছু জায়গায় আঁচড়ের দাগ রয়েছে। তার মাসিকের রাস্তায় রক্তক্ষরণ হয়েছে।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


মন্তব্য

Editor & Publisher: Md. Abdullah Al Mamun

Office: Airport haji camp

Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com

Developed by RL IT BD