আবিদ হাসান, হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ: মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার বলড়া ইউনিয়ন পরিষদ উদ্যোক্তা শামিম আহমেদ কে সরকারি আদেশ অমান্য করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও সেবা নিতে আসা ব্যাক্তিদের সাথে দুর্ব্যবহারের কারণে অপসারণ নয় লিখিতভাবে শোকজ দেয়া হয়েছে বলে জানা গেছে। গত কয়েকদিনের অনুসন্ধানে জানা গেছে- অপসারণের নাটক আর অদৃশ্য সুপারিশ এমনকি মোটা অংকের অর্থ দিয়ে ইউনিয়নে আবার নিয়মিত অফিস করে পুণঃবহালের দৌড়ঝাপে অনেকটাই এগিয়ে গেছেন শামীম।

অনুসন্ধান ও স্থানীয়দের ভাষ্যমতে জানাযায়- ইউনিয়নের উদ্যোক্তা শামীম ইউনিয়নের সেবা নিতে আসা অনেককেই জন্ম নিবন্ধনে ইচ্ছাকৃত ভুল করে,আইডি কার্ডের সংশোধনী, নামজারির আবেদন,পাসপোর্টের আবেদনসহ সকল সেবাতেই সার্ভারের সমস্যা দেখিয়ে ইচ্ছাকৃত ভুল করে জিম্মি করে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে নেয় বলে গুরুতর অভিযোগ রয়েছে। তাছারা উদ্যোক্তা শামীমের অপসারণের কথা শুনে স্থানীয় অনেকেই বাতাসা আর মিষ্টি বিতরণ করে বলেও জানা গেছে। আর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কটুক্তি,গালমন্দসহ অপসারণের দাবি উঠে এবং ইউনিয়নবাসী পাপমুক্ত হলো বলে অনেকেই মন্তব্য করেন।

দানিস্তপুর গ্রামের সচেতন নাগরিক মাসুম শিকদার আক্ষেপ করে জানান, অন্যায়কারী যেই হোক, তাকে ছাড় দেয়া ঠিক হবেনা। দুঃখের বিষয় হলো- শামীমের দৌড়ঝাপ, শোকজের নাকট,অদৃশ্য সুপারিশ আর দুই লক্ষ টাকায় নাকি আবার শামীম ইউপিতে বহাল হওয়ার পথে, এসব আমরা নিয়মিত শুনতেছি। উদ্যোক্তা শামীম আমার কাছে চিন্হিত অপরাধী। মানুষকে জিম্মি করে টাকা কামানোর ধান্দা অনেক পুরনো তার। অবৈধভাবে প্রচুর টাকা কামিয়ে বিভিন্ন জায়গায় বড় বড় ইনভেস্ট করেছে এই শামীম। এজেন্ট ব্যাংকিংসহ গোপনে অনেক বড় জায়গায় অবৈধ লেনদেন আর ইনভেস্ট করে রেখেছে। শামীম যদি আবার এই ইউপিতে বহাল হয়, তবে আমরা রাস্তায় নেমে ভয়ংকর কর্মসুচি দিতে বাধ্য হবো।

স্থানীয় সমাজকর্মী রেজাউল জানান,আমরা বলড়াবাসী হতভাগা না হলে এমন অপরাধীকে কেন আবার পুনঃবহালের কথা শুনতে হচ্ছে। আবার আমাদের রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় শামীম রাতারাতি দুধে ধোয়া তুলসিপাতা হয়ে গেলো। টাকা দিয়ে পুনঃবহালের বিষয়টা ভাল করেই জানি আমি। শোকজের নাটক করে শামীমকে আবার ইউপিতে বহাল রাখলে ঘেরাও কর্মসুচি দেবো আমরা।

পিপুলিয়া গ্রামের গৃহবধু সাদিয়া আক্তার জানান, আমার আইডি কার্ড ছিলোনা বলে জন্ম নিবন্ধনের জন্য ৮শত টাকা নিয়েছিলো শামীম। গত সপ্তাহেও তো শামীম অফিস করলো দেখলাম।

অপসারণের বিষয়ে বলড়া ইউপি প্যানেল চেয়ারম্যান হোসনে আরা বলেন, মনে হয় গত মঙ্গলবার ইউএনও অফিসে আমরা কাগজপত্র জমা দিছি, আমার মনে নাই। শামীম বৃহস্পতিবার পরিষদে আসছিলো ঠিকই, কিন্ত কোন কাজ করেনাই। আমরা শামীমের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি ইউএনও সাহেবের কাছে, সচিব সাহেব জানে, তিনি ভাল বলতে পারবে।

বলড়া ইউপি সচিব মোঃ বাসেদ জানান, অভিযোগের পর সেদিনই ইউএনও স্যার সুতালড়ির অন্য একজনকে দায়িত্ব দিয়েছে। শামীমের বাড়ি এখানেই, গত বৃহঃবার পরিষদে আইছিলো, আপনারা পাগল বানাই ফেলছেন, মরার একটা কায়দা করতেছেন। তাকে শোকজ করা হয়ছে, শোকজের জবাব দিয়েছে, দায় স্বীকার না করে ক্ষমা চেয়েছে।

এ বিষয়ে হরিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কোহিনুর আক্তার জানান, শামীমকে শোকজ দেয়া হয়ছে,শোকজের জবাব সন্তষ্ট না হলে তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে, প্রক্রিয়াধীন আছে। যেহেতু চেয়ারম্যান নিয়োগ দিয়েছে, সেহেতু প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা চেয়ারম্যানই করবে। আর শামীম অফিস করার কথা না, আমি খোজ নিয়ে দেখছি।

উল্লেখ্য যে, বলড়া ইউপি উদ্যোক্তা শামীমের বিরুদ্ধে অতিরিক্ত অর্থ আদায় ও দুর্ব্যবহারের বিষয়ে দ্যা বাংলাদেশ টুডে,প্রতিদিনের সংবাদ, সংবাদ বেলায় খবর প্রকাশ করলে বলড়া ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোক্তার বিরুদ্ধে সমালোচনার ঝড় উঠে। শামীমকে অপসারণ,শাস্তি দাবি এবং আইনি ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে স্ট্যাটাস এবং মন্তব্য করেন অনেকেই।