প্রচ্ছদ / জেলার খবর / বিস্তারিত

জমজমাট শার্শার বাগআঁচড়া বেলতলা কুলের বাজার

১৪ জানুয়ারি ২০২৫, ১:০৮:৫০

ছবি: প্রতিনিধি, সংবাদ বেলা

শার্শা উপজেলা প্রতিনিধি: যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া বেলতলা বাজারে জমে উঠেছে মৌসুমী ফল (বরই) কুলের বাজার। আম ও কুল মৌসুমে মুখরিত হয়ে ওঠে এ বাজারের সব আড়তগুলো। মুলত বাংলা পৌষ,মাঘ ও ফাল্গুন এই তিন মাস এ বাজারে চলে কুলের বেচাকেনা।বৈশাখ মাস থেকে শুরু হয় আমের বেচাকেনা।

বাজার ঘুরে দেখাযায়,প্রতিদিন এ বাজার থেকে ৫ থেকে ১০ টি ট্রাকে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে রপ্তানি হচ্ছে এই মৌসুমী ফল কুল(বরই)। এটি বর্তমানে এই অঞ্চলের অর্থকারী ফসল হিসেবে ও পরিচিতি লাভ করেছে । দেশের কোথাও কোথাও এই ফলটি বরই নামে পরিচিত।

যশোর ও সাতক্ষীরা জেলার সীমান্তবর্তী উপজেলা শার্শা ও কলারোয়ার মাঠসহ আশপাশে মাঠজুড়ে চাষ হচ্ছে এই ফল।এই কুল চাষে দিনে দিনে অন্য কৃষকরাও ঝুঁকছেন।

বিভিন্ন জাতের কুলের মধ্যে থাই আপেল কুল ৬০ থেকে ১৫০টাকা,বলকুল-৭০ থেকে ১২০ টাকা,টক লাল সাদা ৪৫ থেকে ৯০টাকা,গাজীপুরী টক,৪০ থেকে ৭০ টাকা,বেবিকুল ৬০ থেকে ৮০ টাকা,বল সুন্দরী ৭০ থেকে ১০০ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে কুল বিক্রি করতে আসা চাষি হাসানুজ্জামান ও তরিকুল ইসলাম জানান,তারা গত পাঁচ বছর ধরে কুলচাষ করছেন। এ বছর তিনি সাড়ে ৪ বিঘা বিঘা জমিতে থাই আপেল কুল চাষ করেছেন। গত বছরও ৩ বিঘা কুল চাষ করেছিলেন। গত বছরের থেকে এ বছর গাছে অনেক কুল ধরেছে এবং অনেক বেশী দামে কুল বিক্রি করছেন। এভাবে যদি শেষ পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন তাহলে এ বছর অনেক লাভবান হতে পারবেন বলে জানান।

তিনি জানান, এর আগে অন্যান্য বাজারেও কুল বিক্রি করেছেন। কিন্তু বেলতলা বাজারে কুল বিক্রি করে যে লাভ করেছেন তা অন্য কোথাও পাইননি। কারণ এখানকার আড়তদাররা সঠিক দামে এবং সঠিক ওজনে কুল ক্রয় বিক্রি করেন এবং টাকা নিয়ে কোনো তালবাহানা করে না।

সিলেট থেকে আসা কুলের বেপারী রায়হানুজ্জান ও আকরাম আলী জানান, তারা ১৫ বছর যাবত আম,কুল, তরমুজ,আনারসসহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই কারণে প্রতিবছরই বেলতলার এ ফলের মোকামে আসেন। এ বছর এ এলাকায় কুলের ফলন অনেক বেশি। তারপরও কুলের দাম গত বছরের চেয়ে একটু বেশি। তারা যেমন বেশি দামে কিনছেন ঠিক তেমন বেশি দামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রিও করছেন। চাহিদা বেশি থাকায় তারা কুল কিনে ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন।

বাজারের স্থানীয় আড়তদার নাসির উদ্দীন গাইন ও আবুল কালাম জানান,তিনি ৬ বছর ধরে আড়তদারি করছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছর কুলের ফলন অনেক বেশি। সেইসঙ্গে কুলের চাহিদা ও দাম বেশি থাকায় তাদের ব্যবসা এবছর ভালো এবং চাষিরাও অনেক খুশি।তাদপর এ বাজারে চাষিরা নিঃসন্দেহে সঠিক ওজনে এবং সঠিক মূল্যে ফল বিক্রি করতে পারছেন। তাই চাষিরা এ বাজারে কুল বিক্রি করতে আসেন। এই বাজারে দুপুর ১২,৩০মিনিট থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত কুল কেনাবেচা হয়ে থাকে।

বেলতলা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান মুন্না জানান, চাষি ও ব্যবসায়ীরা যাতে নির্বিঘ্নে ব্যবসা করতে পারেন তার জন্য সমস্থ ব্যবস্থা তারা রেখেছেন।। গত বছরের তুলনায় এ বছর যেমন অনেক কুল চাষ হয়েছে তেমনি চাষিরা অনেক বেশি লাভবানও হয়েছে। ঠিক এভাবে যদি আরো ২-১ বছর কুল বেঁচাকেনা হয় তাহলে বেলতলা বাজার বাংলাদেশের দক্ষিণবঙ্গের মধ্যে বিখ্যাত (কুল বাজার) হিসেবে খ্যাতি অর্জন করবে বলে তিনি আশাবাদী।

শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা জানান,এ বছর এ উপজেলায় মোট ১৩৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে। তিনি বেলতলা বাজার পরিদর্শন করেছেন। এ বছর বল সুন্দরী, থাই আপেল, চায়না ও বিভিন্ন জাতের টক কুলগুলোই চাষিরা বেশি চাষ করেছেন এবং তারা গত বছরের চেয়ে বেশী দাম পাচ্ছেন লাভবানও হচ্ছেন।নিয়মিত উপজেলা কৃষি অফিস বেলতলা বাজার মনিটরিং করছে বলে তিনি জানান।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

মন্তব্য