বেক্সিমকোর ১৬টি কোম্পানি বিক্রি করবে সরকার
ছবি: সংগৃহীত
বাংলাদেশের গ্রুপ কোম্পানিগুলোর একটি বেক্সিমকো। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ছোট-বড়, জানা-অজানা মিলিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানির সংখ্যা ১৬৯। কোম্পানিটি ১৯৭০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
এর মালিকানায় দুই ভাই থাকলেও কর্তৃত্ব বেশি রয়েছে সালমান এফ রহমানের। তার হাত ধরেই প্রতিষ্ঠানটি ওষুধশিল্প, সিরামিক, নবায়নযোগ্য শক্তি, টেক্সটাইল, এলপিজি, খাদ্য ও পানীয়, স্যাটেলাইট থেকে হোম টেলিভিশন, পিপিই, মিডিয়া, আইসিটি, রিয়েল এস্টেট, আর্থিক পরিষেবা এবং ভ্রমণ ও পর্যটনসহ বিস্তৃত শিল্পে বিনিয়োগ করে।এই প্রতিষ্ঠানটির পোশাক খাতের ১৬টি কোম্পানির মালিকানা বিক্রি করে দেবে বর্তমান সরকার।
অন্তর্বর্তী সরকারের উদ্যোগে গঠিত ১১ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়েছে। এর বাইরে এই গ্রুপ-সংশ্লিষ্ট বেশ কিছু কোম্পানি বন্ধ করে দেওয়া হবে। কর্মকর্তা-কর্মচারীদের তিন মাসের বেতন-ভাতা পরিশোধের পর বন্ধ করা হবে। তবে চালু থাকবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসসহ শুধু লাভজনক কোম্পানিগুলো।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ছোট-বড়, জানা-অজানা মিলিয়ে বেক্সিমকো গ্রুপের কোম্পানির সংখ্যা ১৬৯। এর মধ্যে পোশাক খাতের কোম্পানির সংখ্যা ৩২, যেগুলো উৎপাদনে রয়েছে। এই ৩২টি কোম্পানির মধ্যে ১৬টির মালিকানা বিক্রির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গত ২৪ নভেম্বর শ্রম ও কর্মসংস্থান উপদেষ্টা এম সাখাওয়াত হোসেনকে আহ্বায়ক করে ১১ সদস্যের ‘বেক্সিমকো শিল্প পার্কের শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রম ও ব্যবসায় পরিস্থিতি পর্যালোচনা বিষয়ক উপদেষ্টা কমিটি’ গঠন করা হয়। ২৮ নভেম্বর ছিল এই কমিটির প্রথম বৈঠক। সেখানেই বেক্সিমকো গ্রুপের বিভিন্ন কোম্পানির বিষয়ে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে তথ্য পাওয়া যায় নথিপত্র থেকে।
সভায় বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠানগুলোকে এ, বি ও সি ক্যাটাগরিতে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে ‘এ’ অর্থাৎ ভালো কোম্পানির শ্রেণিতে থাকবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস। ‘বি’ শ্রেণিতে থাকবে ৩২টি কোম্পানি। আর বাকি সব কোম্পানি থাকবে ‘সি’ শ্রেণিতে।
বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী সভায় প্রস্তাব দেন, বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলোর শ্রেণি বিভাজনের। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে সভায় চারটি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলোর বিষয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর মধ্যে রয়েছে—প্রথমত, বেক্সিমকো শিল্প পার্কের প্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রমিকদের আগামী তিন মাসের বেতন-ভাতার প্রয়োজনীয় অর্থ জোগান দেবে জনতা ব্যাংক। দ্বিতীয়ত, ‘বি’ শ্রেণির কোম্পানিগুলোর স্বত্ব বিক্রির জন্য এক্সপ্রেশন অব ইন্টারেস্ট (ইওআই) চূড়ান্ত করে ঋণদাতা জনতা ব্যাংক আগামী ৯ ডিসেম্বরের মধ্যে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়কে জানাবে।
তৃতীয়ত, হাইকোর্টে চলমান রিটের জবাব তৈরির জন্য একজন অভিজ্ঞ আইনজীবী নিয়োগ করে প্রশাসকের কার্যপরিধি চূড়ান্ত করা। আইনজীবী নিয়োগের প্রয়োজনীয় খরচ দেবে অর্থ বিভাগ।
চতুর্থত, এক সপ্তাহের মধ্যে বেক্সিমকোর কোম্পানিগুলোর শেয়ার হস্তান্তরের নিয়ন্ত্রণ নেবে কর্তৃপক্ষ, যা বাস্তবায়নের দায়িত্ব থাকবে বিএসইসি (বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন) ও বেক্সিমকোর প্রশাসকের হাতে। তবে এসব বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি আশিক চৌধুরী।
এর আগে জনতা ব্যাংক থেকে অর্থ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, বেক্সিমকোর কাছে জনতা ব্যাংক পাবে ২৩ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা, যার মধ্যে ১৯ হাজার ৫০৭ কোটি টাকা মন্দ ঋণ (খেলাপি) হিসেবে শ্রেণিকৃত। বাকি প্রায় তিন হাজার ৩৯৪ কোটি টাকা ওভারডিউ অবস্থায় রয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে যা মন্দ ঋণে পরিণত হবে।
ব্যাংক কোম্পানি আইনের মতে কোনো ব্যাংকের মূলধনের ২৫ শতাংশের বেশি কোনো একক গ্রাহককে ঋণ না দেওয়ার বিধান রয়েছে। কিন্তু ৪১০ শতাংশ ছাড়িয়ে আশঙ্কাজনক মাত্রায় ঋণগুলো দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সর্বশেষ
Office: Airport haji camp
Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com
Developed by RL IT BD
মন্তব্য