৪৫ বছরেও কাটেনি ইবির নাম বিভ্রাট

মানিক হোসেন, ইবি থেকে: আজ ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ৪৬ তম জন্মদিন। ১৯৭৯ সালের এই দিন থেকে আজ পর্যন্ত বিভিন্ন চড়াই উতরায়ের মধ্যদিয়ে ৪৫ টি বছর অতিক্রম করেছে দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গের এই শ্রেষ্ঠ বিদ্যাপীঠ। দীর্ঘ এ পথচলায় প্রাপ্তির থেকে অপ্রাপ্তির তালিকাটা বেশ দীর্ঘ। বড় আক্ষেপের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বিভ্রাট নিয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দফতরে ব্যবহার করা হয় ভিন্ন ভিন্ন নাম। সূচনালগ্ন থেকে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির এ নাম বিভ্রাট। যার কারণে শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বিভিন্ন সময় শিক্ষার্থীরা দাবি জানালেও কর্তৃপক্ষের সদিচ্ছার অভাবে এ অভিশাপ থেকে মুক্তি পায়নি বিদ্যাপীঠটি।
খোজ নিয়ে জানা যায়, তথ্য, প্রকাশনা ও জনসংযোগ দপ্তরের প্রকাশনায় ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ, বাংলাদেশ’ বিভিন্ন বিভাগ ও শাখায় ব্যবহৃত নামগুলোর মধ্যে রয়েছে ‘কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া, ইসলামী বিশ্বদ্যিালয়, কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ’, ‘ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়’, ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ’-সহ সাত থেকে আটটি ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করা হচ্ছে।
সর্বশেষ ২০১৮ সালের চতুর্থ সমাবর্তনে বিশ্ববিদ্যালয়ের নামের পাশে থাকা কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহের বদলে ‘বাংলাদেশ’ শব্দটি ব্যবহার করে তৎকালীন প্রশাসন। বিভিন্ন সভা-সেমিনার কিংবা জাতীয় দিবসগুলোতে নিজ নিজ বিভাগগুলোর ব্যানারগুলোতে নাম বিভ্রাটের বিষয়টি মাঝেমধ্যেই প্রকাশ্যে আসে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাদেশ ১৯৮০ এর ধারা ৩(১) এ উল্লেখ আছে- ‘এ আইনের বিধান অনুযায়ী একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হইবে যাহা ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’ নামে অবিহিত হইবে।’ কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তি প্রস্তরে খোদাই করে লেখা আছে- ‘বাংলাদেশ ইসলামিক বিশ্ববিদ্যালয়’। প্রধান ফটকে বড় অক্ষরে লেখা হয়েছে ‘ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়’। এছাড়া বিভিন্ন দপ্তর, পরিবহন, বিভাগ, বিভিন্ন ফলক, চিঠি, প্রকাশনা, সাইনবোর্ডে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহার করা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দপ্তর ও গণমাধ্যমগুলোতে ভিন্ন ভিন্ন নাম ব্যবহারের ফলে বিভ্রান্তিতে পড়তে হচ্ছে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা- কর্মচারীদের। শিক্ষার্থীদের পরিচয় প্রদান ও চাকরির আবেদনে বিভিন্ন নামের কারণে বিড়ম্বনার শিকার হতে হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভিন্ন সময় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের জোর দাবি বিশ্ববিদ্যালয়টির অধ্যাদেশ অনুযায়ী একটি নাম ব্যহহার করে প্রত্যেকটি দপ্তরকে স্বীকৃত নাম ব্যবহারে নির্দেশনা এবং বাকি অন্য নামগুলো ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হোক।
শিক্ষার্থী দিদারুল ইসলাম রাসেল বলেন, অত্যান্ত দূঃখের সাথে বলতে হয় বিশ্ববিদ্যালয় ৪৬ বছরে পদার্পন করলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা নির্দিষ্ট নাম নেই। চাকরির পরিক্ষাসহ বিভিন্ন জায়গায় পরিচয় দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদেরকে বিরম্বনায় পরতে হয়। যেহুতো আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন আছে সেখানর উল্লেখিত নাম ব্যবহারের অনুরোধ করছি। বিশ্ববিদ্যালয় দিবসে নাম বিরম্বনার বিষয়ে প্রশাসন পদক্ষেপ নিবে বলে প্রত্যাশা করছি।
এবিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকীব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ বলেন, একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনির্দিষ্ট নাম নেই, এটা অত্যান্ত দুঃখের। দেশে নতুন সরকার গঠন হলে সংসদে আইন পাশের মাধ্যমে এই নাম বিরম্বনার সমাধান হবে।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সর্বশেষ
Office: Airport haji camp
Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com
Developed by RL IT BD
মন্তব্য