সোমবার ৪ আগস্ট, ২০২৫, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ণ

ছেলেকে টর্চার করে মাকে হত্যার স্বীকারোক্তি আদায়ের অভিযোগ

১৭ নভেম্বর, ২০২৪ ১০:১৪:৫৯
ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় মাকে হত্যার পর মরদেহ ডিপ ফ্রিজে রাখার অভিযোগে ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। তবে পুলিশ বলছে, ছেলে নয়, ওই বাসার ভাড়াটিয়া এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

শনিবার (১৬ নভেম্বর) সাদকে টর্চার করে মাকে হত্যার স্বীকারোক্তি আদায় করা হয়েছে বলে র‍্যাবের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনেছেন সাদের বাবা ও নিহত উম্মে সালমার স্বামী আজিজুর রহমান। তিনি দুপচাঁচিয়া দারুসসুন্নাহ কামিল মাদরাসার উপাধ্যক্ষ ও উপজেলা জামে মসজিদের খতিব।

আজিজুর রহমান জানান, গত ১১ নভেম্বর জানাজার পর তাকে ও ছেলে সাদ বিন আজিজুর রহমানকে র‍্যাব তাদের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। এরপর সাদকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। তখন তিনি পাশের রুমে বসে ছিলেন। এ সময় সাদকে অনেক টর্চার করা হয়। মনে হয় এ কারণেই সাদ তার মাকে হত্যার স্বীকারোক্তি দিয়েছিল।

তিনি জানান, স্ত্রীকে হারানোর পরদিনই মাকে হত্যার অভিযোগে ছোট ছেলেকে গ্রেপ্তার করা হয়। একদিনের ব্যবধানে এমন ঘটনায় তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। কোনোভাবেই মানতে পারছিলেন না তার শান্তশিষ্ট ছেলেটা নিজের মাকে হত্যা করবে? তিনি বারবার চাচ্ছিলেন স্ত্রী (সালমা) হত্যার আসল রহস্য উদঘাটন হোক।

সাদের বাবা বলেন, র‍্যাব এবং পুলিশকে তাদের চাহিদা মতো তথ্য দিয়েছি। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর দুই সংস্থাকেই ভাড়াটিয়া মাবিয়া সুলতানার কথা বারবার বলেছি। কিন্তু র‍্যাব মাবিয়ার বিষয়টি আমলে নেয়নি।

তিনি জানান, মাবিয়া নামের ওই নারী চার মাস আগে তার বাড়ি ভাড়া নেয়। শুরু থেকেই মাবিয়ার আচরণ সন্দেহজনক ছিল। তার স্ত্রী গত সপ্তাহে বলেছিল, ওকে (মাবিয়া) রাখা যাবে না; বের করে দাও। তিনি তখন মবিয়াকে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলেছিলেন। সে সময় চেয়েছিল। এরই মধ্যে একদিন তার স্ত্রীর সঙ্গে মাবিয়ার ঝগড়া হয়। সেসময় তার স্ত্রী মবিয়াকে বলেছিলেন, আপনি চলে যান। আপনার ভাড়া দেওয়া লাগবে না। পরবর্তীতে মাবিয়া তার স্ত্রীকে জোর করে বের করে দিতে পারবে না বলেও হুমকি দেয়।

আজিজুর রহমান বলেন, হত্যাকাণ্ডের দুই দিন আগেও আমার স্ত্রী আমাকে বলেছিল, তুমি ওকে বের করে দাও। সে যেকোনো অঘটন ঘটাতে পারে। আমি তাকে বের করে দেওয়ার উদ্যোগও নিয়েছিলাম। কিন্তু, তার আগেই এই ঘটনা ঘটে গেল।

ছেলে সাদের বিষয়ে উপাধ্যক্ষ আজিজুর রহমান জানান, র‍্যাব যখন সংবাদ সম্মেলন করে জানাল, সাদ তার মাকে হত্যার কথা স্বীকার করেছে। তখন তারা খুব অবাক হয়েছেন। এ ঘটনায় ছেলের ও তার ব্যাপক সম্মান ক্ষুণ্ন হয়েছে, তারা সামাজিকভাবে হেয় হয়েছেন। তার ছেলের মানসিক অবস্থা এখন কী একমাত্র সেই বলতে পারবে। পুলিশ প্রাথমিকভাবে হত্যাকাণ্ডে সাদের কোনো সম্পৃক্ততা পায়নি।

রাষ্ট্রের দায়িত্বশীল একটা বাহিনী এমন কাজ করবে কখনো আশা করিনি, র‌্যাব প্রসঙ্গে এ কথা বলেন সাদের বাবা।

এদিকে র‍্যাব-১২ এর বগুড়া কোম্পানির পক্ষ থেকে কেউই গণমাধ্যমে মুখ খুলছেন না। র‍্যাব কর্মকর্তাদের বিভিন্ন মোবাইল নম্বরে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও রিসিভ করা হয় না। কোম্পানি কমান্ডার মেজর এহতেশামুল হক খান বদলি হয়ে বগুড়া থেকে চলে গেছেন।

এর আগে, গত ১০ নভেম্বর বগুড়া-নওগাঁ আঞ্চলিক মহাসড়ক সংলগ্ন ‘আজিজয়া মঞ্জিল’ বাড়িতে খুন হন উম্মে সালমা। এ ঘটনায় নিহতের ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুরকে গ্রেপ্তার করা হয়। সেসময় র‌্যাব জানিয়েছিল, বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় হাত খরচের টাকা নিয়ে বিরোধে ছোট ছেলে সাদ বিন আজিজুর (১৯) তার মা উম্মে সালমা খাতুনকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে। শুধু তাই নয়, ওড়না দিয়ে হাত-পা বেঁধে লাশ বাড়ির ডিপ ফ্রিজে রাখে।

তবে শুক্রবার (১৫ নভেম্বর) পুলিশ দাবি করেছে, ছেলে নয়, উম্মে সালমা খাতুনকে হত্যার পর মরদেহ ফ্রিজে রাখেন বাড়ির ভাড়াটিয়া।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


মন্তব্য

Editor & Publisher: Md. Abdullah Al Mamun

Office: Airport haji camp

Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com

Developed by RL IT BD