বিপৎসীমা ছাড়াল সুরমার পানি, সিলেট-সুনামগঞ্জে ফের বন্যার শঙ্কা

ভারতের চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টিপাত ও পাহাড়ি ঢল অব্যাহত থাকায় দ্বিতীয় ধাপে বাড়তে শুরু করেছে সিলেট ও সুনামগঞ্জের নদ-নদীর পানি। এরইমধ্যে নিম্নাঞ্চলে পানি প্রবেশ করে অনেক এলাকা পুরোপুরি ডুবে গেছে। গত ২৪ ঘণ্টায় কুশিয়ারা নদীর পানি সামান্য কমলেও বিপৎসীমা ছাড়িয়েছে সুরমা। দুই দফা বন্যার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের বন্যার কবলে পড়তে যাচ্ছেন সিলেট ও সুনামগঞ্জের বাসিন্দারা।
সোমবার (১ জুলাই) সকালে সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমা অতিক্রম করেছে বলে জানিয়েছে সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড। আবার পাহাড়ি ঢলের কারণে পানি যাদুকাটা নদী হয়ে তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের আনোয়ারপুরের একটি অংশ প্লাবিত করেছে। তাই খেয়া নৌকা ব্যবহার করছেন স্থানীয়রা।
এ দিকে রোববার সকাল ৬টা থেকে সোমবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৩৯ দশমিক ৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। কিন্তু আজ সকালে বৃষ্টিপাত আরও বেড়েছে। সোমবার সকাল ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত তিন ঘণ্টায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে সিলেটে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে এ অঞ্চলে ভারী বর্ষণের সতর্কবার্তা দেওয়া হয়েছে। সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, রোববার বিকেল চারটা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টা সিলেট বিভাগের ভারী (২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি) থেকে অতি ভারী (২৪ ঘণ্টায় ৮৯ মিলিমিটারের ওপরে) বৃষ্টি হতে পারে।
এ বিষয়ে সিলেট আবহাওয়া অফিসের সহকারী আবহাওয়াবিদ শাহ মো. সজীব হোসাইন বলেন, ‘সোমবার তিন ঘণ্টায় ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। আরও ভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।’
সিলেট পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ৯টায় সুরমা নদীর পানি কানাইঘাট পয়েন্টে বিপৎসীমার ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এর আগে সকাল ৬টায় বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়। এই পয়েন্টে পানির বিপৎসীমা ১২ দশমিক ৭৫ সেন্টিমিটার। রোববার সন্ধ্যায় বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচে দিয়ে প্রবাহিত হয়।
সিলেট জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, জেলায় ১৩টি উপজেলার মধ্যে ১০টি উপজেলার আশ্রয়কেন্দ্রে রোববার পর্যন্ত ১০ হাজার ৯০৩ জন আশ্রয় নিয়েছেন। জেলায় ৬৫৩টি আশ্রয়কেন্দ্র প্রস্তুত রয়েছে। এর মধ্যে ২১৯টি আশ্রয়কেন্দ্রে লোক উঠেছেন। তবে সিলেট সিটি করপোরেশন ও সদর উপজেলায় আশ্রয়কেন্দ্রে লোকজন নেই।
এ দিকে গত ২৪ ঘণ্টায় ভারী বৃষ্টি ও চেরাপুঞ্জিতে ১৮৬ মিলিমিটার বৃষ্টি হওয়ায় পাহাড়ের পাদদেশের নিচু এলাকায় পানি প্রবেশ করেছে। তাহিরপুর-সুনামগঞ্জ সড়কের বড় অংশ ফের তলিয়ে যাওয়ায় জেলা শহরের সঙ্গে সরাসরি যান চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। যাত্রী ও এলাকাবাসীকে চলাচলে ব্যবহার করতে হচ্ছে নৌকা।
সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় চেরাপুঞ্জিতে বৃষ্টি হয়েছে ১৮৬ মিলিমিটার। এ দিকে সারারাত সুনামগঞ্জে বৃষ্টি হওয়ায় কারণে উজানের পানিতে সীমান্তের নিচু সড়ক প্লাবিত হয়েছে। এতে স্বল্পমেয়াদি বন্যার আশঙ্কা রয়েছে।
পাউবো সিলেটের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাশ বলেন, বিপৎসীমা ছাড়িয়ে সুরমা নদীর পানি ৩০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। কুশিয়ারার পানি বাড়লেও তা বিপৎসীমা অতিক্রম করেনি। কুশিয়ারা নদীতে জুড়ী নদী ও শেরপুরের মনু নদের পানি এসে মিলিত হয়। একই নদীতে আরও দুটি নদীর পানি মিলিত হওয়ায় পানি বেড়ে যায়। ফলে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার নিচে নামতে সময় লাগে। এ ছাড়া নিম্নাঞ্চল প্লাবিত থাকায় এবার পানি ধীরগতিতে নামছে।
Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
সর্বশেষ
Office: Airport haji camp
Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com
Developed by RL IT BD
মন্তব্য