সোমবার ৯ জুন, ২০২৫, ০৫:৫২ অপরাহ্ণ

অভিযোগের পাহাড় নেত্রকোনা জনস্বাস্থ্যের প্রকৌশলী মশিউর রহমানের বিরুদ্ধে

২৯ এপ্রিল, ২০২৪ ৮:৪৮:১৪

নেত্রকোনা জেলার জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান। যার দাপটে সরগম নেত্রকোনা জেলায় অবস্থিত সরকারি এই দফতরটি। টেন্ডার নিয়ন্ত্রণ থেকে শুরু করে কি এমন অভিযোগ নেই তার নামে সেই হোদিস মেলা দায়।

কাজ না করে অর্থ আত্মসাৎ, টেন্ডার পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ব্যাংকের মাধ্যমে ঘুষ নেয়াসহ অফিস স্টাফদের ও ঠিকাদারদের সাথে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ ও তাদের প্রান নাশের হুমকি দেয়ারও আভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। সেই সঙ্গে ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জামালপুরে বাড়ি নির্মাণ করছেন বলেও জানা গেছে।

এক অভিযোগকারীর অভিযোগে জানা গেছে, নেত্রকোণার মদন ও খালিয়াকুরী উপজেলার ৩০ টি ওয়াশব্লক মেরামত কাজের টেন্ডার পাইয়ে দেওয়ার কথা বলে বুয়েট শাখার সোনালী ব্যাংক একাউন্টের মাধ্যমে ঘুষ বাবদ ৩ লাখ টাকা নেন তিনি। টাকা নিয়েও কাজ না দিলে টাকা ফেরত চাইলে তার উপর চড়াও হন। চিফ ইঞ্জিনিয়ার বরাবর অভিযোগ দিলে অভিযুক্তকারী মশিউর বলেন যা খুশি কর ঐসব চিফ ইঞ্জিনিয়ার আমার কিছুই করতে পারবে না।

এছাড়াও কলমাকান্দাতে হাওড় প্রকল্পের ৫০ টি নলকূপ বসানোর কাজ না করেই বিল উত্তোলন করাসহ ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে জামালপুরে বাড়ি নির্মাণ করা ও বিভিন্ন কারনে স্টাফদের সাথে এবং ঠিকাদারদের সাথে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং প্রানে মারার হমকি দেয়ার অভিযোগও রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

স্থানীয় সরকার মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর ঠিকাদার হাজী আব্দুল ওহাবের লিখিত নেত্রকোনা জেলার, জনস্বাস্থ্যের, ‘নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমান এর নগদ টাকা নিয়ে, কাজ না দেওয়া প্রসঙ্গে অভিযোগ (প্রমাণক সংযুক্ত)’ বিষয় উল্লেখ করে একটি লিখিত অভিযোগে দেখা গেছে, আপনার নিকট নিবেদন এই যে, আমি নেত্রকোণা জেলার একজন ৩য় সারির ঠিকাদার। জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ বিভিন্ন সরকারি দপ্তরে ছোট ও মাঝারি মানের কাজে অংশগ্রহণ করি।

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, নেত্রকোণার নির্বাহী প্রকৌশলী জনাব মশিউর রহমান এর কাছে কাজের কথা বললে তিনি মদন ও খালিয়াকুরী উপজেলার ৩০ টি ওয়াশব্লক মেরামত কাজের প্রাক্কলন দেখিয়ে বলেন, এই কাজটি আপনাকে দিবো আপনি প্রস্তুতি নেন, ই-জিপি ( E-GP) সিস্টেমে কিভাবে কাজ দিবেন এইটা বললে তিনি বলেন ম্যানুয়াল টেন্ডার করে কোটেশন করবো।, আপনি কাজটি করতে চাইলে আমাকে ৩ লাখ টাকা দিতে হবে, তিনি আমাকে সোনালী ব্যাংক, বুয়েট শাখার একটি হিসাব নম্বর ৪৪০৪০৩৪১৬৬১২৪, দেন।

ওই ঠিকানায় টাকা প্রেরণ পূর্বক মূল স্লিপ তাকে দিতে বলেন। কথা অনুযায়ী গত ৩ এপ্রিল তারিখে সোনালী ব্যাংক নেত্রকোনা শাখায় গিয়ে টাকা জমা প্রদান করি এবং মূল স্লিপ উনাকে জমা দিয়ে ওয়ার্ক অর্ডার দিতে বলি।

উনি (মশিউর) ৮ তারিখে দেখা করতে বলেন। ৮ তারিখে উনার কাছে গেলে উনি বলেন, এখন একটু সমস্যা হইতেছে মাস দুয়েক দেরি করেন। আমার অনেক কষ্টের টাকা আমি ফেরত চাইলে আমার উপর তেড়ে আসেন এবং আমাকে বলেন যা খুশি কর ঐসব চিফ ইঞ্জিনিয়ার আমার কিছুই করতে পারবে না। তৎক্ষণাৎ চিফ ইঞ্জিনিয়ার স্যার কে কল দিলে উনি ফোন কেটে দেন। আমি ঠিকাদার শফিক ভাইয়ের সাথে আলাপ করলে তিনি সচিব বরাবর অভিযোগ দিতে বলেন। শফিক ভাই আরো বলেন হাওড় প্রকল্পের অনেক অনিয়ম করেন তিনি, কলমাকান্দা উপজেলার ইঞ্জিনিয়ার উনার খাস লোক এবং একই এলাকার, কলমাকান্দাতে হাওড় প্রকল্পের ৫০ টি নলকূপ বসানোর কাজ না করেই বিল উত্তোলন করেছেন, আরো জানতে পারি ঠিকাদারদের কাছ থেকে টাকা নিয়ে তিনি জামালপুরে বাড়ি নির্মাণ করতেছেন। তিনি ভীষণ ধরণের বদমেজাজি, অফিস স্টাফদের সাথে এবং ঠিকাদারদের সাথে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করেন এবং মায়ার হমকি দেন, শুনেছি।

তিনি অভিযোগ পত্রে আরও বলেন, নেত্রকোনা জনস্বাস্থ্যের প্রকৌশলী মশিউর বুয়েটের ছাত্রদলের নেতা ছিলেন। দপ্তরে অভিযোগ দিলে কোনো কাজ হয়না, তাই বাধ্য হয়েই আপনার বরাবর আবেদন করলাম। প্রমাণক হিসেবে উনার নিজ হিসাব নম্বরে তিন লাখ টাকা জমাদানের ব্যাংক স্লিপ এর ফটোকপি সংযুক্ত করিলাম। বিষয়টি তদন্ত পূর্বক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আকুল আবেদন জানাইতেছি।

এ বিষয়ে জানতে চেয়ে নেত্রকোনা জেলার জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউর রহমানের মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি।

Sangbad Bela’র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।


মন্তব্য

Editor & Publisher: Md. Abdullah Al Mamun

Office: Airport haji camp

Phone: +8801712856310 Email: sangbadbela@gmail.com

Developed by RL IT BD